দিনাজপুর জিলা স্কুল
দিনাজপুর জিলা স্কুল দিনাজপুর জেলার প্রথম ইংরেজি স্কুল। এটি রাজা তারকানাথ এবং কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী ব্যাক্তির উদ্যোগে ১৮৫৪ সালে শহরের ‘প্রতাপ হাউজে’ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৮৫৬ সালে সরকার দিনাজপুর জিলা স্কুল অধিগ্রহণ করে। এসময় স্কুলের ছাত্র ও শিক্ষক সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১২৬ ও ৬ জন। পরের বছর ছাত্র সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ জনে এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে ৩৫৪ জনে উন্নীত হয়। বর্তমানে (২০১০) বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও কলা বিভাগে মোট প্রায় ২০০০ ছাত্র অধ্যয়ন করছে। এছাড়া স্কুলে ৫৩ শিক্ষক এবং ১২ কর্মচারী আছেন। ১৮৬২ সালে এই স্কুল থেকে গিরিশ চন্দ্র চক্রবর্তী প্রথম এন্ট্রাস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। জন্মলগ্ন থেকেই বোর্ড নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় স্কুল সবসময় ভালো ফলাফল করে আসছে, একাধিকবার চূড়ান্ত পরীক্ষায় সকল বোর্ডের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। ১৯৭১ পরবর্তী সময়ে উত্তীর্ণের হার গড়ে ৯৫%-এরও অধিক। ১৯৪৭ সালের পর হতে এ পর্যন্ত ২০ জন প্রধান শিক্ষক স্কুলে কর্মরত ছিলেন।
সরকারিকরণের পরেও উনবিংশ শতাব্দীর পুরোটাই রাজা ও জমিদারদের আর্থিক অনুদান অব্যাহত থাকে। বর্তমানে স্কুলের প্রায় সকল ইমারত বিংশ শতাব্দীর শেষে বা একবিংশ শতাব্দীর প্রথমে নির্মিত হলেও স্কুলের প্রথান শিক্ষকের কক্ষ, স্কুল কার্যালয়, লাইব্রেরিসহ মূল ইমারতটি রাজা বৈদ্যনাথের আমলে (১৭৬০-১৭৮০) রাজার সদর কাছারী হিসেবে নির্মিত হয়। স্কুলে ছাত্রদের জন্য ১৯১০ সাল থেকে একটি ছাত্রাবাস চালু আছে। স্কুলের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ক্যাম্পাসের উত্তর সীমানার মাঝামাঝি অবস্থিত প্রায় ১৬০০ বর্গফুট দৈর্ঘের একটি রিলিফ মানচিত্র। মানচিত্রটি উপমহাদেশের প্রতিটি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতাকে সঠিক করা হয়েছে। [মুহাম্মদ লুৎফুল হক]