হনুমান

চশমাপরা হনুমান

হনুমান (Langur)  প্রাইমেটস (Primates) বর্গের অন্তর্গত লম্বা লেজযুক্ত বানর। বাংলাদেশে হনুমানের তিনটি প্রজাতি পাওয়া যায়। সাধারণ/ধূসর/মুখপোড়া হনুমানের বৈজ্ঞানিক নাম Semnopithecus entellus (পূর্বে নাম ছিল Presbytis entellus)। যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার শহরতলি এবং গ্রাম এলাকার বিচ্ছিন্ন কিছু স্থানে এদের পাওয়া যায়। এদের দেহের রং ফ্যাকাশে-কমলা এবং নিচের দিকে কিছুটা হালকা। মাটিতে থাকা অবস্থায় এরা সাধারণত লেজ বাঁকিয়ে শরীরের উপর দিকে রাখে। প্রাপ্তবয়স্কদের ভ্রুর পিছনে ললাটের উপর চুল বিদ্যমান। মাথাসহ দেহদৈর্ঘ্য ৫১-১০৮ সেমি এবং লেজ ৭২-১০৯ সেমি লম্বা হয়। পুরুষ ও স্ত্রী হনুমানের ওজন যথাক্রমে ৯-২১ কেজি ও ৮-১৮ কেজি হয়ে থাকে। একটি দলে ৮ থেকে ২৫টির মতো সদস্য দেখা যায়। বাংলাদেশে এরা অতি বিপন্ন এবং এদের সংখ্যা এখন দুশোরও নিচে।

কালো/চশমাপরা হনুমান/কালা হনুমানের বৈজ্ঞানিক নাম Trachypithecus phayrei (পূর্বে নাম ছিল Presbytis phayrei)। এরা সিলেট, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বনাঞ্চলে ঘন বাঁশঝাড়ের মধ্যে বসবাস করে। এদের পিঠ ও লেজ ধূসর-কালো কিংবা গাঢ় বাদামি রঙের এবং নিচের দিকটা সাদাটে-ধূসর রঙের হয়। এদের চোখ ও মুখ ঘিরে সাদা বলয় রয়েছে। পুরুষ ও স্ত্রীর দেহদৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৫০-৫৫ সেমি ও ৪৫-৫৩ সেমি এবং ওজন যথাক্রমে ৭-৯ কেজি ও ৮-১৮ কেজি হয়ে থাকে। পুরুষ ও স্ত্রীর লেজের দৈর্ঘ্য গড়ে ৬৫-৮৬ সেমি হয়।

লাল/মুখপোড়া হনুমান/লাল হনুমানের বৈজ্ঞানিক নাম Trachypithecus pileatus (পূর্বে নাম ছিল Presbytis pileata)। এরা চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার (মহেশখালী দ্বীপসহ), ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও সিলেটের বনাঞ্চলে বসবাস করে। কপালে পিছন ফেরানো, সোজা, লম্বা, মোটা, টুপির মতো একগুচ্ছ  চুল থাকার কারণে এরা টুপিওয়ালা হনুমান নামেও পরিচিত। এদের পিঠ ধূসর থেকে গাঢ়-ধূসর রঙের, নিচের দিক ও দাড়ি বাদামি-হলুদ থেকে কমলা-লাল রঙের এবং লেজের মাঝ থেকে শেষপ্রান্ত পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে গাঢ় রঙের হয়। পুরুষ ও স্ত্রী হনুমানের দেহের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৬৮-৭০ সেমি ও ৫৯-৬৭ সেমি, লেজ যথাক্রমে ৯৪-১০৪ সেমি ও ৭৮-৯০ সেমি এবং ওজন যথাক্রমে ১১-১৪ কেজি ও ৯-১১ কেজি হতে দেখা যায়। একটি দলে ৩-১৫ টির মতো সদস্য থাকে।  [এম ফরিদ আহসান]

আরও দেখুন বানর