সীতাকোট বিহার

সীতাকোট বিহার একটি বৌদ্ধ বিহার। বিহারটি দিনাজপুর জেলার নওয়াবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। প্রায় বর্গাকৃতির এ স্থাপত্যটির পরিমাপ পূর্ব-পশ্চিমে ৬৫.২৩ মি এবং উত্তর-দক্ষিণে ৬৪.১১ মি। বিহারটির উত্তর এবং দক্ষিণ বাহুদ্বয় বহির্দিকে প্রক্ষিপ্ত ছিল। প্রশস্ত প্রবেশদ্বারের তোরণ কমপ্লেক্সটি উত্তর বাহুর মধ্যাংশে অবস্থিত। তোরণ অংশে রয়েছে দুটি প্রহরীকক্ষ। পূর্ব বাহুর উত্তরাংশে পেছনের দেওয়াল ভেদ করে একটি সম্পূরক প্রবেশপথ ছিল। দক্ষিণ বাহুর বহির্মুখী অভিক্ষেপটি ছিল একটি হল ঘরের মতো এবং সেই হল ঘরে ঢুকতে হতো ভেতর দিক দিয়ে।

বিহারটিতে মোট কক্ষের সংখ্যা ৪১টি; উত্তর বাহুতে ৮টি এবং অন্য তিন বাহুতে ১১টি করে। কক্ষগুলির পরিমাপ ৩.৬৬ মি  × ৩.৩৫ মি। দেওয়াল দ্বারা বিভক্ত কক্ষগুলির পেছনের দেওয়ালে ছিল কুলুঙ্গি। বিভাজক দেওয়ালের পুরুত্ব ০.৯১ মি থেকে ১.২২ মি এবং পেছনের দেওয়ালের পুরুত্ব ২.৫৯ মি, যদিও সম্মুখের দেওয়ালের পুরুত্ব ১.০৭ মি।

সীতাকোট বিহার, দিনাজপুর

বিহারের ভেতরের দিকে ২.৫৯ মি প্রশস্ত একটি অভ্যন্তরীণ টানা বারান্দা। ১.৬৮ মি লম্বা এবং ১.০৭ মি প্রশস্ত দরজার মাধ্যমে বিহারের কক্ষগুলি অভ্যন্তরীণ টানা বারান্দার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল। একটি ১.২২ মি পুরু এবং ০.৭৬ মি উচ্চতা বিশিষ্ট দেওয়াল সমগ্র বারান্দাকে আঙ্গিনা থেকে আড়াল করে রাখত। বিহারের পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ বাহুর কেন্দ্রীয় কক্ষত্রয় অন্যান্য সাধারণ কক্ষের তুলনায় আয়তনে বড়। প্রতিটি কেন্দ্রীয় কক্ষে ছিল একটি করে ইটের বেদি, যেখানে পূজার মূর্তি রাখা হতো। খুব সম্ভবত দক্ষিণ দিকের কেন্দ্রীয় কক্ষটি ছিল প্রধান মন্দির। প্রধান মন্দিরটির সম্মুখে স্তম্ভ শোভিত প্যাভিলিয়নটি মন্ডপ হিসেবে ব্যবহূত হয়ে থাকবে।

বিহারের ভেতরের দিকে ২.৫৯ মি প্রশস্ত একটি অভ্যন্তরীণ টানা বারান্দা। ১.৬৮ মি লম্বা এবং ১.০৭ মি প্রশস্ত দরজার মাধ্যমে বিহারের কক্ষগুলি অভ্যন্তরীণ টানা বারান্দার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছিল। একটি ১.২২ মি পুরু এবং ০.৭৬ মি উচ্চতা বিশিষ্ট দেওয়াল সমগ্র বারান্দাকে আঙ্গিনা থেকে আড়াল করে রাখত। বিহারের পূর্ব, পশ্চিম এবং দক্ষিণ বাহুর কেন্দ্রীয়

কক্ষত্রয় অন্যান্য সাধারণ কক্ষের তুলনায় আয়তনে বড়। প্রতিটি কেন্দ্রীয় কক্ষে ছিল একটি করে ইটের বেদি, যেখানে পূজার মূর্তি রাখা হতো। খুব সম্ভবত দক্ষিণ দিকের কেন্দ্রীয় কক্ষটি ছিল প্রধান মন্দির। প্রধান মন্দিরটির সম্মুখে স্তম্ভ শোভিত প্যাভিলিয়নটি মন্ডপ হিসেবে ব্যবহূত হয়ে থাকবে।

বিহার ভবনের দক্ষিণ দিকে সামান্য দূরে মূল ভবনের সঙ্গে আবৃত পথ দ্বারা সংযুক্ত সম্মুখভাগে বারান্দাসহ পাঁচটি কক্ষের সন্ধান  পাওয়া গিয়েছে। পন্ডিতদের অভিমত এগুলি শৌচাগার হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। বিহারের ছাদ ঢালাইয়ের জন্য চুন, সুরকি এবং ভার বহনের জন্য কড়িকাঠের ব্যবহার দেখা যায়। সীতাকোট বিহার আঙ্গিনার মধ্যবর্তী স্থানে কোন প্রধান মন্দির ছিল না। এখানে  পাহাড়পুর, শালবন বিহার এবং আনন্দ বিহারের মতো ঐতিহ্যবাহী পোড়ামাটির ফলকও অনুপস্থিত। তবে আকার আয়তনের দিক দিয়ে সীতাকোট বিহারের সঙ্গে বগুড়ায় অবস্থিত ভাসু বিহারের অনেক মিল রয়েছে।

ব্রোঞ্জনির্মিত একটি বোধিসত্ত্ব পদ্মপাণি এবং বোধিসত্ত্ব মঞ্জুশ্রী মূর্তি সীতাকোট বিহার থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্ননিদর্শন। মূর্তি দুটির গঠনশৈলী থেকে অনুমান করা যায় যে, এগুলি সাত-আট শতকে তৈরি। বিহার নির্মাণ সম্পর্কে দুটি নির্মাণকালের কথা বলা হলেও স্তরবিন্যাস পদ্ধতিতে বিহারের কাল নির্ধারণ করা হয় নি। [এস.এস মোস্তাফিজুর রহমান]