সঞ্জয় মহাভারত

সঞ্জয় মহাভারত সতেরো শতকে সঞ্জয় রচিত বাংলা  মহাভারত। এতে মূল মহাভারতের আঠারোটি পর্বসহ তিনটি উপপর্ব রয়েছে; ‘দ্রৌপদীর যুদ্ধ’ এরূপ একটি উপপর্ব। সঞ্জয় এ উপাখ্যানটি নিয়েছেন রামদাস নামক জনৈক গায়েন কবির নিকট থেকে। কাব্যমধ্যে ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষ এই চতুর্বর্গের প্রতিফলন ঘটেছে।

সঞ্জয় চন্দ্রবংশের পরিচয় দানের মাধ্যমে কাব্য আরম্ভ এবং যুধিষ্ঠিরের স্বর্গারোহণের মধ্য দিয়ে কাব্য শেষ করেছেন। কাহিনী-পরিকল্পনা, বর্ণনার স্বচ্ছতা ও প্রবহমানতা, উপমা-অলঙ্কারের প্রয়োগ ইত্যাদি কারণে সঞ্জয় মহাভারত মধ্যযুগে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। কাব্যটি রচনায় কবীন্দ্র মহাভারতের প্রভাব রয়েছে।

মহাভারত হিন্দুদের নিকট পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত। কবীন্দ্র মহাভারতে মুসলমান শাসক  পরাগল খানএর নাম আছে। তাই এমন একটি মতবাদ প্রচলিত আছে যে, গোঁড়া ব্রাহ্মণ সঞ্জয় কবীন্দ্রের কাব্য থেকে মুসলমান শাসকের নাম বর্জন করে ভণিতায় নিজের নাম সংযোজন করেন এবং কিছু কিছু বিষয় নতুন যোগ করেন। এতে তাঁর মহাভারত হিন্দুদের নিকট অধিক গ্রহণযোগ্য হয়। কাব্যটি  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে।  [কল্পনা ভৌমিক]