রহিম খান

রহিম খান উত্তর ভারতের একজন আফগান ভাড়াটে সৈনিক। তিনি শোভা সিং এর সহযোগী ছিলেন। রহিম খানের পৃষ্ঠপোষক শোভা সিং ছিলেন মেদিনীপুর জেলার চেতওয়া-বর্দ পরগনার একজন ক্ষুদ্র জমিদার। ১৬৯৫ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে তিনি বর্ধমানের জমিদার ও প্রধান ইজারাদার কৃষ্ণরায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তাঁকে হত্যা করেন। কৃষ্ণরায়ের প্রাসাদ থেকে লুণ্ঠন করা অর্থ দিয়েই শোভা সিং তাঁর সৈন্যদল গড়ে তুলতে শুরু করেন। গোলাম হোসেন সলিমের মতে, এ সময়ই রহিম খানের আগমন ঘটে। ১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে শোভা সিং-এর সৈন্যদলে অশ্বারোহীর সংখ্যা দাঁড়ায় সাত থেকে আট হাজার। এদের সকলেই ছিল সম্ভবত আফগান ভাড়াটে সৈনিক। ক্ষমতার সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত শোভা সিং এর ১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হঠাৎ মৃত্যু হয় এবং চাচা মহা সিং তাঁর বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তবে এ বাহিনীর মূল নেতা ছিলেন রহিম খান। তাঁর নেতৃত্বে উত্তর বাংলার বিভিন্ন সমৃদ্ধ শহরে আক্রমণাত্মক বিদ্রোহ ও অপ্রতিরোধ্য লুণ্ঠন পরিচালিত হয়।

প্রচলিত রীতিতে কর আদায় এবং বণিকদের আশ্বস্ত করার মাধ্যমে মহা সিং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। এ থেকে মনে হয় যে, বিদ্রোহীরা তাদের সৈন্যবাহিনী এবং আক্রমণের জন্য স্থির করা অঞ্চল বিভক্ত করে ফেলেছিল। মহা সিং যখন ভাগীরথীর তীরে হুগলি দুর্গ ও এর নিম্নবর্তী অঞ্চল আক্রমণে মনোনিবেশ করেন তখন রহিম খান তাঁর আক্রমণের দিক পরিবর্তন করেন ভাগীরথীর উত্তর অংশে।

রহিম খানের নেতৃত্বে বিদ্রোহী বাহিনী ১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দের ক্রান্তিলগ্নে মাকসুদাবাদের দিকে প্রবেশ করে। পথিমধ্যে ৫০০০ অশ্বারোহী ও ৫০০০ পদাতিক সৈন্যের একজন মনসবদার এ বাহিনীর হাতে পরাজিত হয়। মাকসুদাবাদে তারা লুণ্ঠনও পরিচালনা করে। এমতাবস্থায় বণিকরা পালিয়ে যায় এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আঠারো শতকের শেষ দিকের ঐতিহাসিক সলিমুল্লাহ এ বিজয়ের কৃতিত্ব প্রদান করেন রহিম খানকে।

রহিম খানের বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং তা দশ হাজার অশ্বারোহী ও সমানসংখ্যক পদাতিক সৈন্যের এক বাহিনীতে পরিণত হয়। কোনরূপ বাধা ব্যতীত বিদ্রোহী বাহিনী পৌঁছে যায় রাজমহলের প্রান্তদেশে। গঙ্গা পার হয়ে ঢাকা থেকে  মুগল সৈন্যদের সঙ্গে আগত জবরদস্ত খানকে প্রতিরোধ করার জন্য তারা কোট্টপুরেও দুহাজার অশ্বারোহী সৈন্য প্রেরণ করে। ভাগীরথীর পশ্চিম তীর এবং এর সমৃদ্ধ ও মুক্ত বাজার শহরগুলি সম্পূর্ণভাবে আফগান লুণ্ঠনকারীদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

ইউরোপীয়দের প্রতিরোধের কারণে ‘রাজা’ মহা সিং হুগলি ও এর নিম্নবর্তী অঞ্চল দখল করতে ব্যর্থ হয়ে উত্তর অংশে চলে যান। কাসিমবাজারের বণিক ও ডাচ কোম্পানির ওয়াকিলগণ এ স্থানকে আশু লুণ্ঠনের হাত থেকে রক্ষার জন্য রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

বিদ্রোহী বাহিনী কর্তৃক মাকসুদাবাদ বিজয়, বিশেষ করে সে অঞ্চলের মুগল ফৌজদারদের পরাজয়ের ফলে পার্শ্ববর্তী জমিদারগণ বিদ্রোহীদের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন। ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি একটি ফরাসি চিঠির মাধ্যমে জানা যায়, মাকসুদাবাদের লুণ্ঠিত সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২০ লক্ষ রূপি। ভাগীরথীর পশ্চিম তীরের অধিকাংশ মানুষ এ সময় গঙ্গা অতিক্রম করে ঢাকার দিকে পলায়ন করে। বিদ্রোহীরা মাকসুদাবাদকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করে। এটা মনে হয় যে, রহিম খান কখনও আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে নেতা দাবি করেন নি। ইংরেজদের মতে, বিদ্রোহী বাহিনীর জেনারেল মহা সিং বাংলার রাজা হওয়ার জন্য নিজের অভিলাষ ব্যক্ত করেছিলেন। গুজব রটেছিল যে, বিদ্রোহীদের পরবর্তী আক্রমণ পরিচালিত হবে ঢাকার ওপর, যদিও তা কোনদিন বাস্তবায়িত হয়নি। এ থেকে উত্তর বাংলায় মুগল শাসনের দুর্বলতাই প্রকাশিত হয়।

১৬৯৬ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরের শেষ দিক পর্যন্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা স্বাভাবিক হয় নি। এ সময় ইংরেজরা উপলব্ধি করে যে, শীঘ্রই এর পুনরারম্ভেরও কোন সম্ভাবনা নেই। কিছু বিচ্ছিন্ন থানা এবং ইউরোপীয় কোম্পানির সুরক্ষিত অঞ্চল ব্যতীত ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে বিদ্রোহ অব্যাহত ছিল। বিদ্রোহীরা মাকসুদাবাদের ধনী ব্যবসায়ী ব্যতীত মাকসুদাবাদের কোষাগার থেকেও এক লক্ষ দশ হাজার রূপি লুণ্ঠন করে। এ অর্থ তারা ব্যয় করে উচ্চহারে ভাড়াটে সৈন্যদের পেছনে। ভাগীরথীর তীরে টোল আদায়ের জন্য তারা চৌকি স্থাপন এবং নির্দিষ্ট দামে ‘রাজার দস্তক’ প্রদান করতে থাকে যাতে নির্বিঘ্নে নৌ চলাচল করতে পারে। তথাপি কিছু বিচ্ছিন্ন স্থানে মুগল থানাদাররা বিদ্রোহীদের নৌকা বাজেয়াপ্ত করে বিভিন্ন সময় সেগুলি ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়।

বিদ্রোহী দলের বিচ্ছিন্ন একটি অংশ ভাগীরথীর তীরে ইউরোপীয় ফ্যাক্টরিগুলির দিকেও অগ্রসর হয়। তবে ইউরোপীয়রা তা প্রতিরোধ করে। হুগলি থেকে ঢাকার রাস্তা এ সময় খোলা থাকলেও বণিকগণ এ পথে তাদের অর্থ বা পণ্য সামগ্রী কোনটাই প্রেরণে উৎসাহী ছিলেন না। দু’ অংশে বিভক্তির কারণে বাংলা সমান ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করে। তথাপি সর্বদাই বিদ্রোহীদের মধ্যে দ্বিধা বিভক্তি ছিল স্পষ্ট। উচ্চ পর্যায় যখন স্থিতিশীল কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় তৎপর, তখন নিম্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের ঝোঁক ছিল লুণ্ঠনের দিকে।

আফগান ক্যাপ্টেনদের কেউ কেউ তাদের অসদুপায়ে অর্জিত অর্থ হারানোর ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না বলে ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে লুণ্ঠিত অর্থসহ নিজ দেশের উদ্দেশে বাংলা ত্যাগ করেন। এ সময় বিদ্রোহী নেতারা অরক্ষিত শহরসমূহে তাদের লুণ্ঠন কার্য পরিচালনা করেন। বণিকরা বিদ্রোহীদের চল্লিশ হাজার রূপি চাঁদা প্রদান সত্ত্বেও বিদ্রোহীরা কাসিমবাজার লুণ্ঠন করে। ওলন্দাজদের কাছ থেকে চার লাখ রূপি এবং ফরাসিদের কাছ থেকে নয় হাজার রূপি দাবি করে বিদ্রোহীরা। সৈন্যদের প্রাপ্য পরিশোধের জন্য বিদ্রোহী নেতারা অর্থ সংগ্রহে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। বণিক ফনেভিল (Fonneville) একজন অফিস সহকারিসহ রাতের বেলায় চন্দননগরের দিকে পালিয়ে গেলে কাসিমবাজারের ফরাসি ফ্যাক্টরি লুণ্ঠিত হয়।

১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চের পরও রাজমহল থেকে পাটনায় মালামাল প্রেরণ ছিল সমস্যাপূর্ণ। একজন বড় মনসবদার মুহম্মদ তকীকে পরাজিত করার পর বিদ্রোহীরা মালদা লুণ্ঠন করে। এ সময় জবরদস্ত্ত খান নদীর দিকে দ্রুত অগ্রসর হন। উত্তর ভারত থেকে সৈন্যবাহিনীর আগমনের পূর্বে তাঁকে পরাজিত করার কৌশল নিয়ে অগ্রবর্তী দলের সঙ্গে বিদ্রোহীদের কয়েকবার যুদ্ধ হয়। তাদের মনোযোগ ছিল মাকসুদাবাদের দিকে, যা হুগলিকে পুনরাক্রমণ থেকে রক্ষা করেছিল।

সমকালীন ইংরেজ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রহিম খান যখন তাঁর বিদ্রোহী বাহিনীর প্রধান ক্ষমতা হিসেবে আফগান শক্তিকে ব্যবহার করেন, তখন থেকেই বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হন। রাজমহলে বিদ্রোহীরা ইংরেজ কোম্পানির প্রতিনিধি শেডন (Sheddon) ও তেশ্মেকারকে (Teshmaker) বন্দি করেন। ইংরেজরা শোভা সিং-এর বিধবা স্ত্রীর মধ্যস্থতায় তাঁদের মুক্তির চেষ্টা করে। কিন্তু মাকসুদাবাদের বিদ্রোহী ফৌজদার গুজরাট খানের দাবি অনুযায়ী ইংরেজরা অস্ত্রের যোগান দিতে ব্যর্থ হওয়ায় রহিম খান এতে রাজি হননি।

সলিমুল্লাহর মতে রহিম খান ‘শাহ’ উপাধি ধারণ করেছিলেন, যদিও এর সমর্থনে সমসাময়িক প্রমাণ বা সাক্ষ্য পাওয়া যায় নি। ইংরেজদের চিঠি অনুযায়ী বর্দায় তারা (শোভা সিং ও রহিম খান) মুদ্রাও প্রচলন করেছিলেন। রাজমহলের পূর্ববর্তী ফৌজদার মুহম্মদ ইউসুফ ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের মে মাসের শেষদিকে গুজরাট খানকে পরাজিত ও হত্যা করেন। এ বিজয় জবরদস্ত খানকে মাকসুদাবাদ দখলেই কেবল সাহায্য করে নি, উত্তর ভারত থেকে মুগল সৈন্যদের আগমনের পথও প্রশস্ত করেছিল। এ সময় বাংলার নতুন সুবাহদার শাহজাদা আজিমুদ্দীন তাঁর বিশাল বাহিনী নিয়ে পাটনায় আসেন।

জবরদস্ত খানের আগমনের পূর্বে নিয়ামত খান তাঁর পুত্রসহ রহিম খানকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। যুদ্ধে নিয়ামত খান ও তাঁর পুত্র উভয়েই নিহত হন এবং রহিম খান আহত অবস্থায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এ যুদ্ধের পর ভগবানগোলায় রহিম খান ও জরবদস্ত খানের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে পরাজিত হয়ে রহিম খান বর্ধমানে পলায়ন করেন। জবরদস্ত খান তাঁর পশ্চাৎধাবন করেন। ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে জবরদস্ত খান বর্ধমান এলাকার প্রভুতে পরিণত হন এবং বিদ্রোহীরা পালিয়ে যেতে থাকে বর্দার দিকে। ১৬৯৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে জবরদস্ত হিন্দুস্থানের উদ্দেশে যাত্রা করেন। শাহজাদার প্রায় দশ হাজার অশ্বারোহী ও বারো হাজার পদাতিক সৈন্য ছিল। বিদ্রোহীদেরও প্রায় সমান সংখ্যক সৈন্য ছিল। সৈন্যদলসহ জবরদস্ত খানের প্রস্থানে রহিম খান ও মহা সিং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। তাঁরা নদীর তীরে উলুবারিয়ায় টোল স্টেশন স্থাপন করেন এবং সমঝোতার আলোচনার জন্য আগত উড়িষ্যার সুবাহদার কামদার খানকে সহজেই পরাস্ত করেন।

গোলাম হোসেনের মতে রহিম খান ও খাজা আনোয়ার-এর মধ্যে সমঝোতা কালেই খাজা আনোয়ার রহিম খান কর্তৃক নিহত হন। খাজা আনোয়ার ছিলেন শাহজাদার সহচর। ইংরেজদের চিঠি থেকে সমঝোতার চেষ্টার কথা জানা যায়, তবে শাহজাদা বিদ্রোহীদের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। ১৬৯৮ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে শাহজাদা তাঁর সৈন্যদল নিয়ে দামোদর অতিক্রম করেন। এ সময় বিদ্রোহীরা বালাশোর লুণ্ঠন করে নদীয়ার দিকে অগ্রসর হন, যেখান থেকে ফাদার পিরে মার্টিন পলায়ন করেন।

শাহজাদার আখবরাত-এর ভিত্তিতে যদুনাথ সরকার বলেন যে, শাহজাদা চন্দ্রকোণার দিকে অগ্রসর হয়ে শোভা সিং ও রহিম খানকে পরাজিত ও নিহত করেন। তবে এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কারণ নবনিযুক্ত দীউয়ান মুর্শিদকুলী খানকে চন্দ্রকোণা এলাকায় শান্তি স্থাপনের জন্য ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে একটি অভিযান পরিচালনা করতে হয়েছিল। এছাড়া ইতোমধ্যেই শোভা সিং-এর মৃত্যু হয়। শাহজাদা সম্ভবত রহিম খান ও মহা সিং-কে নিহত করেছিলেন। গোলাম হোসেন যুদ্ধে রহিম খানের মৃত্যুর বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

বিদ্রোহী একজন ক্ষুদ্র জমিদারকে ভাগীরথীর পশ্চিম তীরের শাসকে পরিণত করার কৃতিত্ব রহিম খানের। তিনি বাংলার প্রায় সমগ্র উত্তর ও পশ্চিম অংশ নিজের নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। তবে একটি বেসামরিক সরকার গঠনের মাধ্যমে নিয়মিত কর আদায়ে তিনি ব্যর্থ হন। এ ব্যর্থতাই তাঁকে আফগান ভাড়াটে সৈন্য দলকে রাখতে বাধ্য করে। ভাগীরথী তীরের সমৃদ্ধ শহরগুলি লুণ্ঠন করে তিনি এদের উচ্চহারে ভাতা প্রদান করতেন। এ ধরনের অপ্রতিরোধ্য লুণ্ঠনে শুধু ইউরোপীয় কোম্পানিগুলিরই নয় বরং স্থানীয় কৃষক এবং বণিকদেরও বৈরী করে তুলেছিল। ‘রাজা’ একটি নিয়মিত সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিলেন বটে, তবে রহিম খানের নেতৃত্বে পরিচালিত এই লুণ্ঠন মুগলদের সাফল্যের সুযোগ করে দেয়।

বাংলার উত্তর অংশের সমৃদ্ধ নগরগুলি যখন লুণ্ঠনকারীদের দ্বারা বিধ্বস্ত হচ্ছিল, ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর এর বিরূপ প্রভাবে অর্থ-সংকট দেখা দিচ্ছিল, তখন ইউরোপীয় কোম্পানিগুলি এর সুযোগ নিয়ে তাদের বাণিজ্যিক অঞ্চল সুরক্ষিত করে, যা বাংলায় তাদের ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। এতে অবাক হবার কিছু নেই যে, সমকালীন ইউরোপীয় দলিল-দস্তাবেজ এই বিদ্রোহকে সম্রাট আওরঙ্গজেবের আসন্ন মৃত্যুর প্রাক্কালে গৃহযুদ্ধেরই পরিণাম হিসেবে উল্লেখ করেছে।  [অনিরুদ্ধ রায়]

গ্রন্থপঞ্জি  Salimulla, Tarikh-i Bangla (tr. by F Gladwin), Calcutta, 1788; Ghulam Hussain Salim, Reaz-us Salatin (tr. into Bengali), Dacca, 1974; Om Prakash, ‘The Sobha Singh Revolt, Dutch Policy and Response’, Bengal Past & Present, January-June 1975, Pt-I; Aniruddha Ray, Adventurers, Landowners and Rebels, Bengal c.1575 - c.1715, New Delhi, 1998.