মেহেরপুর জেলা

মেহেরপুর জেলা (খুলনা বিভাগ)  আয়তন: ৭৫১.৬২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°৩৬´  থেকে ২৩°৫৮´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৩৩´ থেকে ৮৮°৫৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুষ্টিয়া জেলা ও পশ্চিমবঙ্গ (ভারত), দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা ও পশ্চিমবঙ্গ (ভারত), পূর্বে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলা, পশ্চিমে পশ্চিমবঙ্গ (ভারত)।

জনসংখ্যা ৬৫৫৩৯২; পুরুষ ৩২৪৬৩৪, মহিলা ৩৩০৭৫৮। মুসলিম ৬৪০৭৫১, হিন্দু ৭৮৭০, বৌদ্ধ ১৪, খ্রিস্টান ৬৬২৭ এবং অন্যান্য ১৩০।

জলাশয় ভৈরব, ইছামতি, মাথাভাঙ্গা ও কাজলা নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ব্রিটিশ আমলে মেহেরপুর জেলা অবিভক্ত নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে মেহেরপুর শহরের গোড়াপত্তন হয় এবং ১৯৬০ সালে একে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মেহেরপুর মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

জেলা
আয়তন (বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
৭৫১.৬২ ১৮ ১৮৩ ২৭৪ ৮৩৩৯৩ ৫৭১৯৯৯ ৮৭২ ৪৬.৩
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
গাঙ্গনী ৩৬৩.৯৫ ৯০ ১৩৭ ২৯৯৬০৭ ৮২৩ ৪২.২
মুজিবনগর ১১১.৫১ - ২৯ ৩৩ ৯৯১৪৩ ৮৮৯ ৫০.৫
মেহেরপুর সদর ২৭৬.১৫ ৬১ ১০৪ ২৫৬৬৪২ ৯২৯ ৪৯.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ৩০ ও ৩১ মার্চ গাঙ্গনী উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে আনসার মুজাহিদ এবং সাধারণ জনগণের লড়াইয়ে আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পাকবাহিনী শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর উপজেলায় (পূর্ব নাম: ভবেরপাড়া বৈদ্যনাথতলা) স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী এম এন এ। একই দিনে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার শপথ গ্রহণ করে। ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল পাকবাহিনী মেহেরপুর শহরের আমঝুপিতে ৮ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। জেলার মেহেরপুর কলেজের পেছনে ১টি বধ্যভূমি এবং কাজীপুর ও টেপুখালিতে ২টি গণকবর রয়েছে; যে স্থান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করা হয় তাকে কেন্দ্র করে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৬.৩%; পুরুষ ৪৬.৯%, মহিলা ৪৫.৭%। কলেজ ৭, ভকেশনাল ইনস্টিটিউট ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬০, প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০০, মাদ্রাসা ১১। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: মেহেরপুর সরকারি কলেজ (১৯৬২), মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৩), গাঙ্গনী ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৩), মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ (১৯৮৪), গাঙ্গনী মহিলা কলেজ (১৯৯৫), মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয় (১৮৫৪), মেহেরপুর মডেল হাইস্কুল (১৮৫৯), মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭), মেহেরপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯৪০), গাঙ্গনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৫)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৮.৯৫%, অকৃষি শ্রমিক ৩.২৪%, শিল্প ০.৮৭%, ব্যবসা ১৩.৮৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২১%, নির্মাণ ১.০৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৪%, চাকরি ৩.৮১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫৯% এবং অন্যান্য ৫.৩৩%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: আযম; সাপ্তাহিক: পরিচয় (১৯৮৫), চুম্বক (১৯৮৬); পাক্ষিক: পশ্চিমাঞ্চল; মাসিক: সাধক (১৯১৩), পল্লী শ্রী (১৯৩৫), সীমান্ত (১৯৬২), প্রবাহ (১৯৭৯); সাময়িকী: বসুমতি, নন্দনকানন; বুলেটিন: রক্তস্বাক্ষর (অনিয়মিত), আগামী (অনিয়মিত); অবলুপ্ত: সাপ্তাহিক: মুজিবনগর (১৯৮৮), মেহেরপুর (১৯৯২)।

লোকসংস্কৃতি বাউল গান, দেহতত্ত্ব গান, শাস্ত্র গান, মারফতি গান, পালা গান, কবি গান, ধাঁধা, প্রবাদ-প্রবচন উল্লেখযোগ্য।

গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ ও কমপ্লেক্স। [মো. আবু হাসান ফারুক]

আরো দেখুন  সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মেহেরপুর জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; মেহেরপুর জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।