মুনির ঘুন

মুনির ঘুন  বগুড়াস্থ মহাস্থানগড় এর পূর্ব-প্রাকারের উত্তরাংশে অবস্থিত একটি টিবি। মুনির ঘুন শব্দের অর্থ ঋষি বা সন্ন্যাসীর বাঁক। উত্তর-দক্ষিণে দীর্ঘ এই দুর্গ প্রাকারটি মুনির ঘুন এলাকায় ৩০ মিটার ভেতরের দিকে বেঁকে পুনরায় উত্তর-দক্ষিণ বরাবর চলমান হয়েছে। ফলে যে বাঁক তৈরি হয়েছে সেটিই স্থানীয় জনশ্রুতি অনুযায়ী মুনির ঘুন নামে পরিচিত। খননের পূর্বে ঢিবিটি ছিল জঙ্গলাকীর্ণ উঁচু ভূমি। এখানে কোন মুনি-ঋষির আস্তানা ছিল কি না, জানা যায়নি। ১৯২৮ সালে কে.এন দীক্ষিত মুনির ঘুন খনন করেন। ফলে এখানে পাল যুগের দুর্গ-প্রাচীর এবং দুটি bastion উন্মোচিত হয়। দুর্গ-প্রাকার নির্মাণের পর সেখানে এগুলি সংযুক্ত করা হয়েছিল, যাতে নিরাপত্তার প্রয়োজনে পর্যবেক্ষণ করা যায়। দুর্গের অভ্যন্তর থেকে বুরুজ দুটিতে ওঠা-নামার জন্য ঢালু টেরেস বা ধাপের ব্যবস্থা ছিল। এছাড়া বুরুজের উত্তর বহিরাংশে নদী ভাঙ্গন রোধের জন্য ঢালু রক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, মুনির ঘুনের পাশ দিয়ে করতোয়া নদী প্রবাহিত হতো। এছাড়া করতোয়াস্থ শিলাদেবীর ঘাট নামক স্থানটি মুনির ঘুনের খুব কাছেই অবস্থিত। মুনির ঘুনের নিকট পাল যুগের দুর্গ-প্রাকারের বহিরঙ্গ নিরেট ইটের তৈরী হলেও এর অভ্যন্তরাংশ (core) ইটের টুকরা মিশ্রিত পেটানো মাটি দ্বারা ভরাট করা। এখানে বিদ্যমান দুর্গ-প্রাকার ৩ মিটার উঁচু এবং ৩.৩৫ মিটার চওড়া।  [মোঃ আইয়ুব খান]