মাদকদ্রব্য অপব্যবহার

মাদকদ্রব্য অপব্যবহার  সুরা, তামাক এবং মানুষের চেতনা ও অনুভূতি আচ্ছন্নকারক দ্রব্যাদি মাদকদ্রব্য হিসেবে চিহ্নিত, এ সব নিষিদ্ধ দ্রব্যের পাশাপাশি কিছু কিছু জীবন রক্ষাকারী ঔষধও নেশার উপকরণ হিসেবে ব্যবহূত হয়ে থাকে। মানুষের স্বাভাবিক মানসিক ক্রিয়ার ওপর প্রভাববিস্তারকারী এ প্রক্রিয়াকেই মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যদিও জাতিসংঘ কনভেনশনে মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। অবৈধ মাদকদ্রব্য অসংখ্য জীবন ধ্বংস করে এবং সামাজিক ক্ষতির কারণ হয়। মাদকদ্রব্যের অবৈধ ব্যবসায় এবং এর প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বহু শতাব্দী ধরে মাদকদ্রব্য গ্রহণ জীবনের জন্য একটি দুষ্ট বাস্তবতা এবং গত ৫ দশকে এতে আসক্তির পরিমাণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশ্বে অবৈধ মাদক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত ওপিয়ামজাত দ্রব্যাদি তৈরি হয় মূলত পপি নামের একটি গাছের নির্যাস থেকে। ১৯৯৬ সালের এক পরিসংখ্যান অনুসারে ওই সময় গোটা বিশ্বে পপিচাষের জমির পরিমাণ প্রায় ২,৮০,০০০ হেক্টরে সম্প্রসারিত হয়েছিল। অবৈধ উপায়ে উৎপন্ন ওপিয়ামজাত মাদকের প্রায় ৯০ শতাংশ আসে দুটি প্রধান উৎপাদন এলাকা গোল্ডেন ক্রিসেন্ট (আফগানিস্তান, ইরান, পাকিস্তান) এবং গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল (লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড) থেকে। অনুমান করা হয় যে, ১৯৯৬ সালে ওপিয়াম নির্যাসের অবৈধ উৎপাদন ৫,০০০ টনে দাঁড়িয়েছিল। এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ ওপিয়াম (আফিম নামে পরিচিত) হিসেবে গ্রহণ করা হয় বলে মনে করা হয়। বাকি অংশ অবৈধ গবেষণাগারে হেরোইনে রূপান্তর করা হয়। বিশ শতকের নববইয়ের দশকে বছরে ৩০০ টনেরও বেশি হেরোইন উৎপাদন করা হয় বলে ধারণা করা হয়। এর অধিকাংশই তৈরি হয় রপ্তানির জন্য। ১৯৮০-র দশকের মাঝামাঝি থেকে বিশ্বকে কৃত্রিম রাসায়নিক উদ্দীপক (Synthetic stimulant) অপব্যবহারের প্রবলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। ১৯৯৩ সালে আটককৃত এসব দ্রব্যের পরিমাণ ১৯৭৮ সালের তুলনায় ৯ গুণ বেশি ছিল। দেখা গেছে এ সময়ে এসব দ্রব্যের ব্যবহার বাৎসরিক ১৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গোপনভাবে উৎপাদিত কৃত্রিম রাসায়নিক মাদকের মধ্যে রয়েছে অ্যামফিটামাইন (amphetamine) ধরনের উদ্দীপক। অন্যদিকে নিদ্রাকর্ষক (sedatives) ধরনের কৃত্রিম মাদকের মধ্যে রয়েছে বারবিচুরেটস (barbiturates) এবং বেনজোডায়াজিপাইনস (benzodiazepines)। এগুলি বৈধ পথেই অবৈধ বাজারে চলে যায়।

বাংলাদেশের অবস্থান গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ও গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলের মাঝামাঝি হওয়ার ফলে বাংলাদেশ মাদ্রকদ্রব্য চোরাচালানের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে খুবই উপযুক্ত। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে শত শত নদ-নদী ও খাল দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। মাদক চোরাকারবারিরা সমুদ্র উপকূল ও জলপথকে তাদের পণ্য পাচারের খুবই উপযুক্ত পথ হিসেবে বিবেচনা করে। তৃতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে ভারতের অনুপ্রবেশযোগ্য বিশাল সীমান্ত। ভারতে বৈধভাবে ফেনসিডিল (কোডেইন ফসফেটযুক্ত কফ সিরাপ) প্রস্ত্তত হয়। ১৯৮২ সালে উৎপাদন বন্ধের পর সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ফেনসিডিল একটি অপব্যবহারযোগ্য মাদকদ্রব্যে পরিণত হয়েছে। টাইডিজেসিক (tidigesic) নামে একটি ভারতীয় ইনজেকশনও বাংলাদেশে মাদক হিসেবে অপব্যবহূত হয়ে থাকে। এর সঙ্গে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে ইয়াবা নামের আরেকটি উত্তেজক ট্যাবলেট যা মূলত মেথামফেটাইন ও ক্যাফেইনের মিশ্রণ। ভারতের সাথে এই বিশাল ও অনুপ্রবেশযোগ্য সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসব মাদকদ্রব্য সহজেই চোরাচালান হয়ে আসছে। চতুর্থত, প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির ফলে, বিশেষ করে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল চালুর ফলে, বিদেশি সংস্কৃতি এ অঞ্চলের প্রিয় ও প্রাচীন নৈতিক মূল্যবোধসমূহ নষ্ট করে ফেলছে। যুবকরা তথাকথিত ফাস্ট লাইফ নকল করতে গিয়ে মর্যাদার প্রতীক হিসেবে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করছে।

অপব্যবহূত মাদক দুই প্রকারের: প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য এবং চেতনানাশক দ্রব্যাদি বা কৃত্রিম রাসায়নিক দ্রব্যাদি। ওপিয়াম, কোকেন এবং ক্যানাবিস প্রথম শ্রেণিভুক্ত এবং পেথিড্রিন (pethidrin), বারবিচুরেটস (barbiturates), নিদ্রাকর্ষক (tranquilizers) অ্যামফিটামাইনস (amphetamines), লাইসারজিক অ্যাসিড ডাইথেলমাইড (lysergic acid diethalmide) দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত। জাতিসংঘ কনভেনশনের অধীনে উভয় প্রকারের মাদক দ্রব্যেরই নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে যে সমস্ত মাদকদ্রব্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে সেগুলি হচ্ছে: হেরোইন, গাঁজা, পেথিড্রিন এবং ফেনসিডিল ও ইয়াবার মতো কিছু কিছু চেতনানাশক রাসায়নিক দ্রব্য। পূর্বে নওগাঁ জেলায় গাঁজার চাষ হতো। এটা রাজস্ব আদায়ের একটি ভালো উৎস ছিল। কিন্তু জাতিসংঘ কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গাঁজার উৎপাদন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে।

অবৈধ মাদকের ব্যবহার এবং অপরাধ হাত ধরাধরি করে চলে। মাদক ব্যবহারকারীরা তাদের নেশা মেটানোর জন্য মাদকদ্রব্য পেতে আক্ষরিক অর্থেই যে কোন অপকর্ম করতে পারে। মাদক গ্রহণকারীরা প্রায়শই যে সমস্ত অপরাধ করে থাকে সেগুলি হচ্ছে: পকেটকাটা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দেহব্যবসা, অযথা ঝামেলা বাধানো এবং মাদকদ্রব্য বিক্রয়। এরা মাদকের প্রভাবে অনেক অপরাধ করে থাকে। দেশে নেশা আসক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর স্বাভাবিক পরিণতি হিসেবে অপরাধ প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশে গত এক দশকে মাদক সংক্রান্ত আটক, অবৈধ মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত এবং চিকিৎসা সাহায্যপ্রার্থী মাদকাসক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের সমস্যাসমূহ সন্ত্রাস, অপরাধ, পারিবারিক বিপর্যয়, স্বাস্থ্যসমস্যা ইত্যাদির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে স্বাভাবিক প্রজনন ক্ষমতায় বাধাসহ মস্তিষ্ক, হূদযন্ত্র ও ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। মাদক ব্যবহারের সঙ্গে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যে সমস্যা জড়িত তা হলো যে সমস্ত মাদকসেবী ইনজেকশন নেয় তাদের মধ্যে এইচআইভি-র বিস্তার।

বাংলাদেশ সরকার মাদকের অপব্যবহারকে অন্যতম মারাত্মক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং এর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টার প্রতি দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এ জাতীয় মাদকদ্রব্য প্রয়োগনীতি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সরকার জাতিসংঘ কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯০ সংশোধন করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় মাদকদ্রব্য অপব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে: ১. জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (NNCB) প্রতিষ্ঠা। এই বোর্ডের কাজ হচ্ছে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ডে বিদেশি ও দেশীয় অংশগ্রহণকে উৎসাহ প্রদান; ২. নেশা আসক্তদের বাধ্যতামূলক চিকিৎসা; ৩. মাদকদ্রব্য চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন; ৪. মাদকের অপব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির তথ্য প্রদানে বাধ্যবাধকতা; ৫. অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা আছে এ ধরনের ঔষধের ব্যবস্থাপত্র প্রদানের ওপর বিধিনিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ আরোপ; ৬. ঘুম আনে, চেতনা অবশ করে এমন ধরনের ঔষধের উৎপাদন, বিতরণ, ব্যবস্থাপত্র প্রদান, বিক্রয় ও ব্যবহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ বিধান চালু; ৭. নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং ক্ষতিকর প্রভাব মাত্রার ভিত্তিতে ঔষধের শ্রেণিবিন্যাসকরণ; ৮. সম্পৃক্ত মাদকের পরিমাণ ও ক্ষতিকর প্রভাবের কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করা; ৯. মাদক সংশ্লিষ্ট অপরাধের আর্থিক তদন্ত; ১০. মাদক চোরাচালানকারীর সম্পত্তি আটক ও বাজেয়াপ্তকরণ এবং ১১. মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পরীক্ষাগার স্থাপন।

জাতিসংঘ মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার দেশে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার প্রতিরোধের জন্য একটি ৫ বছর মেয়াদি মাস্টার প্ল্যান গ্রহণ করা হয়েছিল। আইন প্রয়োগ ও আইনি সহায়তা, প্রতিরোধক শিক্ষা ও তথ্য এবং ব্যবস্থাপত্র ও পুনর্বাসন- এই তিনটি খাতে বিভক্ত মহাপরিকল্পনাটি ১৯৯৪ সালে বাস্তবায়ন শুরু হয়। এর প্রধান অংশগুলি হচ্ছে: কর্মসূচি উন্নয়নে একাগ্রতা ও কারিগরি সহযোগিতা, নীতিমালা প্রণয়ণ, আইন ও নিয়মের আধুনিকীকরণ, সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রশিক্ষণ (বিদেশে ও দেশে), কর্মশালা আয়োজন, যানবাহন, সহায়ক দ্রব্যাদি ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ, সামাজিক হস্তক্ষেপ কর্মসূচি এবং সামাজিক সচেতনতা অভিযান।

মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম তা একটি বহুমুখী কাজ এবং সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রের লোকবল ও সংগঠন মিলে এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। বাংলাদেশে যে সমস্ত সংগঠনের ওপর মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ কার্যক্রম ন্যস্ত করা হয়েছে সেগুলি হচ্ছে: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর পুলিশ, কাস্টমস, বিজিপি এবং কোস্টগার্ড। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, শিক্ষা, তথ্য, সমাজকল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বিভিন্নভাবে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার প্রতিরোধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সর্বমোট জনবল হচ্ছে ১,২৭৪। সারা দেশে এর ৩৪টি কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে একটি প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় সদরে জোনাল অফিস, প্রধান প্রধান জেলা শহরে ২৫টি আঞ্চলিক অফিস এবং জোনাল গোয়েন্দা কার্যালয়। সদর দপ্তরে প্রশাসনের ৪টি শাখা এবং একটি গোয়েন্দা শাখা রয়েছে। প্রশাসনের ৪টি শাখার প্রতিটিতে তত্ত্বাবধানের জন্য একজন করে পরিচালক রয়েছেন।

বাংলাদেশ উত্তরাধিকারসূত্রে ১৯৬১ সালের মাদকদ্রব্যের ওপর একক কনভেনশনের অংশীদারিত্ব লাভ করে এবং চেতনানাশক দ্রব্য কনভেনশন ১৯৭১ এবং ১৯৮৮ সালের মাদকদ্রব্য ও চেতনানাশক দ্রব্যের অবৈধ পাচার রোধে জাতিসংঘ কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য ও চেতনানাশক দ্রব্য সম্পর্কিত সার্ক কনভেনশন ১৯৯০-তেও স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ জাতীয়ভাবে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে ২৬ জুন পালন করে থাকে। বাংলাদেশ ১৯৯৩ সালে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কারিগরি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে উপনীত হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিকট থেকে যোগাযোগের যন্ত্রপাতি লাভ করে।

কলম্বো পরিকল্পনা ব্যুরোর ডিএপি, সার্ক, ইউনেস্কো, এসকাপ, আইএলও প্রভৃতি সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ উপকরণ ও সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। গত কয়েক বছরে এখানে বেশ কয়েকটি সার্ক কর্মশালা, সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। নতুন দিল্লিস্থ ডিইএ-র আঞ্চলিক কার্যালয়ের সঙ্গে মাদকদব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ভারতের সঙ্গে এসব দেশের ঢাকায় কর্মরত মাদকদ্রব্য লিয়াজোঁ কর্মকর্তার মাধ্যমে তথ্য বিনিময় হয়ে থাকে। ভিয়েনাস্থ আইএনসিবি এবং কলম্বোয় অবস্থিত এসডিওএমডি-তে এখান থেকে নিয়মিত তথ্য পাঠানো হয়ে থাকে। অবৈধ মাদকদ্রব্য পাচার প্রতিরোধের ব্যাপারে মায়ানমারের সঙ্গেও বাংলাদেশের একটি চুক্তি রয়েছে। মাদকদ্রব্য অপব্যবহার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে ইরানের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ভারতের সঙ্গে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার প্রতিরোধের ব্যাপারে দেশে ও বিদেশে সকল ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। কলম্বো পরিকল্পনা ব্যুরো, সার্ক, ইউএনডিসিপি, জাইকা ইউএসএলএ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিইএ এবং ইএনএম, ফ্রান্স ও ব্রিটিশ সরকার প্রধানত বিদেশের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। দেশের অভ্যন্তরেও প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজিত হয়। অতিরিক্ত পরিচালক থেকে পরিদর্শক পর্যন্ত সকল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মাদক অপব্যবহার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক ও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ইউএনডিসিপি-র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প গত তিনবছর ধরে ব্যাপক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। সারাদেশব্যাপী বিচারকগণ, ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনজীবীদের জন্য আইন প্রয়োগ ও আইনগত সহায়তা বিষয়ে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করে যাচ্ছে।

মাদকদ্রব্যের সরবরাহ ও চাহিদা উভয় ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কাজ করছে। সরবরাহ হ্রাস-সংক্রান্ত কর্মকান্ডসমূহ হচ্ছে: ক. লাইসেন্স প্রদান, খ. মনিটরিং এবং পরিদর্শন; গ. গোয়েন্দাগিরি ও আইন প্রয়োগ; ঘ. মাদকজাতীয় শস্য নিধন ও মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ; ঙ. তদন্ত এবং চ. মামলা ও শাস্তি।

অ্যালকোহল, স্পিরিট, অ্যালকোহল মিশ্রিত দ্রব্যাদি এবং চিকিৎসা কাজে ব্যবহূত কিছু মাদকজাতীয় ঔষধের উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি, আমদানি, পরিবহণ, বিতরণ বা বিক্রয়, ব্যবহার বা গ্রহণের নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশে লাইসেন্স প্রদান পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মাদকদ্রব্য সরবরাহের বৈধ ও অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, এসবের নির্গমন পথ, অবস্থান, ধরন, সংখ্যা এবং ব্যবহারকাল নিয়ন্ত্রণ ও সীমিতকরণে লাইসেন্স প্রদান একটি কার্যকরী পদ্ধতি। এটি লাইসেন্সধারীর সরবরাহ সংক্রান্ত আচরণকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে থাকে।

মদের দোকানগুলি মাসে একবার এবং অন্যগুলি তিন মাসে একবার পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শক পদের ঊর্ধ্বে একজন কর্মকর্তা যে কোন সময় যে কোন লাইসেন্স পরীক্ষা করতে পারেন। এ ধরনের ক্ষমতা মাদক সরবরাহকারী ও ব্যবহারকারী উভয়ের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও মনিটর করতে সহায়তা করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তার নিজস্ব গোয়েন্দাগিরি ও আইন প্রয়োগ কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরাসরি মাদকদ্রব্য সরবরাহ বা চলাচলের পথে আঘাত হেনে থাকে। পুলিশ, কাস্টমস এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ (বিজিবি)ও সরাসরি একই কাজ করছে। অধিদপ্তর সারাদেশে তার ১০৩টি সার্কেল অফিসের মাধ্যমে আইনপ্রয়োগ কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। প্রতিটি সার্কেলের জনবলের সংখ্যা ৬। এদের মধ্যে একজন পরিদর্শক, একজন উপপরিদর্শক, একজন সহকারী উপপরিদর্শক এবং ৩ জন সিপাই রয়েছে।

বাংলাদেশে কোন নেশাজাতীয় শস্য উৎপন্ন হয় না। সুতরাং শস্য নিধন বা শস্য প্রতিস্থাপন কর্মসূচিরও কোন প্রয়োজন হয় না। তবে, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সামান্য পরিমাণ গাঁজা গাছ আটক ও ধ্বংস করা হয়। পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আদালতে মাদক সংক্রান্ত মামলাসমূহ পরিচালনা করে থাকে। বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশের পরিদর্শক আছে। ২৫টি আঞ্চলিক সদর দপ্তরে ১২ জন আইনজীবী ও ৩৭ জন সহকারী আইনজীবী রয়েছেন। মাদক সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার সাধারণ আদালতে হয়ে থাকে। এই আদালতগুলিতে হাজার হাজার মামলা বিচারাধীন অবস্থায় পড়ে আছে। সুতরাং কয়েকটি বড় বড় শহরে কিছু আদালত শুধু মাদক সংক্রান্ত মামলার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া প্রয়োজন।

বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের চাহিদা হ্রাস সংক্রান্ত যে সমস্ত কর্মকান্ড অনুশীলন করা হয়ে থাকে সেগুলি হচ্ছে: ক. প্রতিরোধ, খ. শিক্ষা, গ. মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও করারোপ, ঘ. মাদকদ্রব্যের বিজ্ঞাপনের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধ আরোপ, ঙ. চিকিৎসা এবং চ. পুনর্বাসন।

কিন্তু এক্ষেত্রে তথ্য, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, স্বাস্থ্য, যুব ও ক্রীড়া, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং তাদের অধীনস্থ বিভাগসমূহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য দেশব্যাপী মাঝে মাঝে র‌্যালি, সেমিনার ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে নিয়মিতভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবাদ বুলেটিন এবং বিশেষ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ স্যুভেনির প্রকাশিত হয়ে থাকে। মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ৬০ সেকেন্ডের একটি টিভি স্পট নির্মাণ করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য-বিরোধী তথ্য খুৎবায় বলার জন্য মসজিদের ইমামদের প্রশিক্ষণ প্রদানের একটি কর্মসূচি নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। বেশ কয়েকটি সিরিজের পোস্টার, স্টিকার, বুকলেট ও ব্রোশিওর প্রকাশ করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে ইউএনডিসিপি-র আর্থিক সহায়তায় এনজিওদের সম্পৃক্ত করে সারাদেশে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার প্রতিরোধের জন্য সরকার একটি ব্যাপক কম্যুনিটি অ্যাকশন প্ল্যান হাতে নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের সমস্যাবলি তুলে ধরে জনসভা ও সেমিনার পরিচালনা করে থাকেন। তারা স্থানীয় সিনেমা হলে মাদক সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির তথ্যসম্বলিত সিনেমা স্লাইড প্রদর্শন করে থাকেন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরও মাদকদ্রব্য অপব্যবহার প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। বাংলাদেশ টেলিভিশন মাদকদ্রব্য বিরোধী অনুষ্ঠান প্রচার করে থাকে। টেলিভিশনে প্রায়শই আলোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এনজিও ও সামাজিক সংগঠনসমূহ মাঝে মধ্যে মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের ওপর প্রতিরোধ কর্মসূচি গ্রহণ করে।

বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য মাস্টার প্ল্যানের আওতায় প্রণীত বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য চাহিদা হ্রাসের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনায় ১৯টি সুনির্দিষ্ট কৌশলের উল্লেখ রয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ইউএনডিসিপি যৌথভাবে এটি প্রণয়ন করেছে। কৌশলসমূহ হচ্ছে: ১. মাদকদ্রব্য চাহিদা হ্রাস কর্মকান্ড সুষ্ঠভাবে সমন্বয়; ২. কম্যুনিটি সমন্বয় কমিটি গঠন; ৩. প্রতিরোধ সামগ্রীর একটি ‘কোর প্যাকেজ’ তৈরি ও তা বিতরণ; ৪. কম্যুনিটি ও ধর্মীয় নেতা এবং অন্যান্য প্রতিরোধ কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; ৫. একটি প্রশিক্ষিত পরামর্শক ক্যাডার গঠন এবং যথাযথস্থানে প্রতিরোধমূলক পরামর্শ বিতরণ; ৬. এনজিও-দের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; ৭. যুবকদের জন্য পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ-সুবিধা ও কর্মসূচি তৈরি; ৮. ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ কর্মসূচি প্রণয়ন; ৯. বেসরকারি খাত ও ব্যবসায়ী সমিতিগুলির জন্য উদ্বুদ্ধকরণ/ উৎসাহদায়ক কর্মসূচির ব্যবস্থা; ১০. সমাজে প্রতিরোধমূলক শিক্ষা বিস্তারের জন্য আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা; ১১. একটি গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন; ১২. বিজ্ঞাপন নীতির সংশোধন; ১৩. পাল্টা বিজ্ঞাপন ধারণার উন্নয়ন; ১৪. তামাক, তামাকজাত পদার্থ এবং ঔষধের লেবেলে ও প্যাকেটের গায়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক সতর্কতা বাণী লিপিবদ্ধ করা; ১৫. পিতা-মাতার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থা ও তাদের ফোরাম গঠন; ১৬. আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থায় প্রতিরোধমূলক শিক্ষা অন্তর্ভুক্তকরণ; ১৭. বিদ্যালয়ে মাদকদ্রব্য-মুক্ত পরিবেশ তৈরি; ১৮. শিক্ষাবিদদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; এবং ১৯. কর্মক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ কর্মসূচির উন্নয়ন ও বিতরণ।

৫ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনায় চিকিৎসা ও পুনর্বাসন ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কৌশলের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল। সেগুলি হচ্ছে: ক. কম্যুনিটিভিত্তিক চাহিদা নিরূপণ; খ. একটি গ্রাহক (client) মনিটরিং ব্যবস্থার উন্নয়ন; গ. আন্তঃসংস্থা তথ্য বিতরণ; ঘ. মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত বিদ্যমান তথ্যসূত্রের উন্নয়ন; ঙ. নীতিমালা ও কর্মসূচিতে মাদকসেবীদের কলঙ্ক মোচনের (distigmatization) ওপর গুরুত্বারোপ; চ. গবেষণা, মনিটরিং ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা; ছ. জনবলের প্রশিক্ষণ; জ. সম্পদ বরাদ্দ; ঞ. চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবার সমন্বয়; ট. সামাজিক বন্ধন ও সদ্য আরোগ্যপ্রাপ্ত রোগীর শুশ্রূষা; ঠ. কম্যুনিটিভিত্তিক ও লক্ষ্যকেন্দ্রিক কর্মসূচির উন্নয়ন ও বিতরণ; ড. বিদ্যমান কর্মসূচি ও নেটওয়ার্কের ব্যবহার; ঢ. চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের একটি মডেলের উন্নয়ন; ন. যথাযথ ক্ষতি নিরোধক মডেল চালু; এবং ত. এইচআইভি/ এইডস-এর ওপর গুরুত্ব আরোপ।

সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুল পাঠক্রমে মাদক শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আঞ্চলিক মাদক নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের প্রতিরোধ দলের সদস্যরা নিয়মিতভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে থাকেন এবং মাদকদ্রব্য অপব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাবের ওপর শ্রেণিকক্ষে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন।

ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের জন্য মাত্র কয়েকটি ছাড়া বাংলাদেশে সকল ধরনের মাদক জাতীয় ঔষধ ও নেশা জাতীয় দ্রব্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসের কৌশল হিসেবে যে করারোপ পদ্ধতি রয়েছে তা শুধু অ্যালকোহলের ওপর প্রযোজ্য। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের নাগালের বাইরে রাখার জন্য সকল প্রকারের অ্যালকোহল ও স্পিরিটের ওপর অতি উচ্চহারে করারোপ করা হয়। সরকার যে কোন মাদকজাতীয় ঔষধ ও নেশাযুক্ত দ্রব্য উৎপাদনের কাঁচামাল ও অনুষঙ্গী রাসায়নিক পদার্থের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

সরকার বেতার ও টেলিভিশনে কোন মাদকদ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে দেয় না। অবশ্য জাতীয় পত্রিকাগুলিতে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচার অব্যাহত রয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০-এর আওতায় সরকারকে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও মাদক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসার খরচ সাধারণত সরকার বহন করে থাকে। এই আইনের আওতায় জেল হাজতকে মাদক চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার বিধান রয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে স্থাপিত মাদক চিকিৎসা কেন্দ্র কাজ করছে। খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আরও তিনটি মাদক চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি ব্যক্তিগত ক্লিনিক ও হাসপাতালও রয়েছে। এই আইনের আওতায় চিকিৎসক ও পরিবার প্রধানকে মাদকাসক্তদের সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা সংস্থাকে তথ্যপ্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।  [এম এনামুল হক]