মনোহরগঞ্জ উপজেলা

মনোহরগঞ্জ উপজেলা (কুমিল্লা জেলা)  আয়তন: ১৫৯.৩৩ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৪´ থেকে ২৩°১২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৫৯´ থেকে ৯১°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে লাকসাম উপজেলা, দক্ষিণে চাটখিল, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী উপজেলা, পূর্বে নাঙ্গলকোট উপজেলা, পশ্চিমে শাহরাস্তি উপজেলা (চাঁদপুর)।

জনসংখ্যা ২৪৪৯৪৩; পুরুষ ১১২৩৩৯, মহিলা ১৩২৬০৪। মুসলিম ২৩৭৫৯২, হিন্দু ৭৩৪০, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ১ এবং অন্যান্য ৯।

জলাশয় ডাকাতিয়া নদী ও মেল্লার খাল।

প্রশাসন লাকসাম উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ২০০৫ সালে মনোহরগঞ্জ উপজেলা গঠিত হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১১ ১৪৬ ১৮১ ১১৮৯ ২৪৩৭৫৪ ১৫৩৭ ৬৬.৯ ৫৫.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
০.৮৮ ১১৮৯ ১৩৫১ ৬৬.৯
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
উত্তর ঝলম ৪২ ৩১৯৪ ১০৩৯৮ ১০৮৬৮ ৫৮.০
উত্তর হাওলা ৯৪ ৪২৭৫ ১০৯৭৫ ১৩১০৬ ৫৯.২
খিলা ৫৩ ৪৩৬৪ ১০৪৮৯ ১২১২০ ৬৪.৭
দক্ষিণ ঝলম ৪৫ ৩৪১৯ ৯৯২০ ১২০৬২ ৫৬.৫
নাথের পেটুয়া ৭০ ২২১৪ ১০৩০৮ ১২২৫৩ ৫৪.৩
বাইশগাঁও ১৩ ৪১৩২ ১১৩৫০ ১৩৭৪১ ৫৩.৯
বিপুলাসার ১৭ ৩৪১৮ ১১৩৬৮ ১৩২৫৩ ৫০.৬
মৈশাতুয়া ৬৩ ৩৯৯৩ ১০২২৬ ১২১৭৬ ৫২.৯
লণপুর ৫৯ ২৮৮৯ ৮০৬০ ৯৭০১ ৫৮.০
সরসপুর ৮২ ৪২১৯ ১০৬২৪ ১৩১৭১ ৫৫.৯
হাসনাবাদ ৩১ ৩২৫৫ ৮৬২১ ১০১৫৩ ৫০.৯

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ ধিকচান্দা মঠ বাড়ীর মঠ, মিয়া সাহেবের দরগাহ সংলগ্ন নরহরিপুর দিঘি, শরীফপুর মাযার সংলগ্ন নাগেশ্বর দিঘি।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলায় ১৩ সেপ্টেম্বর হাসনাবাদ বাজারের উত্তরে চৌমুহনী নামক স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ লড়াইয়ে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা এলাকার চিতোষী সাতপুকুরিয়া খেয়াঘাট এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলা লাকসামের শ্রিয়াং বাজার, মুন্সিরহাট ও আশিরপাড় বাজারে অপারেশন পরিচালনা করেন। উপজেলার হাসনাবাদে ১টি গণকবর রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন মনোহরগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  শাহ শরীফপুর দরগাহ, চাঁদপুর দরগাহ, বড় মিয়া হুজুর দরগাহ, মিয়া সাহেবের দরগাহ, ধিকচান্দা মঠ, মৈশাতুয়া মহাপ্রভু সেবাশ্রম উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.৯%; পুরুষ ৫৪.০%, মহিলা ৫৭.৪%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৬, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২, কিন্ডার গার্টেন ১৮, ব্র্যাক স্কুল ৪২, মাদ্রাসা ১৫।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, সরিষা, ভূট্টা, আখ।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ১৫, গবাদিপশু ৩০, হাঁস-মুরগি ৩৫, হ্যাচারি ১৫, নার্সারি ৪০০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১১০.৮ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৩.৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪১৯.৬ কিমি; রেলপথ ১৫ কিমি; নৌপথ ২১ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৪, মেলা ১। মেল্লা বাজার, নদনার বাজার, লক্ষণপুর বাজার ও মনোহরগঞ্জ বাজার এবং বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৮.৬% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৮.৮%, ট্যাপ ১.০% এবং অন্যান্য ১০.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭১.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৭.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৩, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৮, ক্লিনিক ৪।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৪১ ও ১৯৬৮ সালের ঘুর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ঘরবাড়ি, ফসল ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও ব্র্যাক, আশা।  [আবুল কালাম আজাদ]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; মনোহরগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।