বোচাগঞ্জ উপজেলা

বোচাগঞ্জ উপজেলা (দিনাজপুর জেলা)  আয়তন: ২২৪.৭৯ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৫°৪০´ থেকে ২৫°৫৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৮°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বীরগঞ্জ ও পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা, দক্ষিণে বিরল উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য , পূর্বে বীরগঞ্জ, কাহারোল এবং বিরল উপজেলা, পশ্চিমে পীরগঞ্জ (রংপুর) উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৬০০৪৯; পুরুষ ৮০৪২৮, মহিলা ৭৯৬২১। মুসলিম ৯৬০৮৬, হিন্দু ৬০৬৮৪, বৌদ্ধ ৮৭, খ্রিস্টান ১৬৩৮ এবং অন্যান্য ১৫৫৪।

জলাশয় প্রধান নদী: টাংগন।

প্রশাসন বোচাগঞ্জ থানা গঠিত হয় ১৯১৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৩৯ ১৪১ ২৭৩৩৫ ১৩২৭১৪ ৭১২ ৬২.৬ ৫০.৪
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১০.২৩ ৩৩ ২৭৩৩৫ ২৬৭২ ৬২.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আটগাঁও ১৩ ৯০৮৯ ১১৯৬৩ ১২১৫৯ ৪৬.৫
ঈশানিয়া ৪০ ৮৮২৯ ১২৩১৭ ১১৮৯৬ ৫১.২
ছাতইল ২৭ ৯৬৫৬ ১১১৮৬ ১১১৬২ ৪৭.৩
নাফানগর ৬৭ ৯১৪৯ ১১৩২৫ ১১৩৪৭ ৬০.৮
মুশিদহাট ৫৪ ৬৭০৬ ৮৯৭১ ৮৮৮১ ৪৯.১
রনগাঁও ৮১ ৯৫৯৩ ১০৮৪১ ১০৬৬৬ ৪৭.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ উপজেলার মেহেরপুর হাটে মুক্তিবাহিনী ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে পাকবাহিনী পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রাম ভস্মীভূত করে। এছাড়া এ উপজেলার পুলেরহাটে মুক্তিবাহিনী মাইন বিস্ফোরণ ঘটালে ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়। উপজেলার ছাতইলে একটি গণকবর ও ডবলদিঘিতে ১টি বধ্যভূমি রয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন বোচাগঞ্জ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৭।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ২১১, মন্দির ৯১, গির্জা ১।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫২.৬%; পুরুষ ৫৭.৭%, মহিলা ৪৭.৪%। কলেজ ৬, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৯, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২০, মাদ্রাসা ১৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: সেতাবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৭), মোল্লাপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), সেতাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), নেহালগাঁ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), বাতাসন উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৬), সেতাবগঞ্জ গার্লস স্কুল (১৯৭৩), সেতাবগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা (১৯৫৭)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সাপ্তাহিক: তুলাই; পাক্ষিক: যোদ্ধা।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ২, ক্লাব ৪০, সিনেমা হল ২।

দর্শনীয় স্থান সাদা মহল, শালবন।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৭৪%, অকৃষি শ্রমিক ৩.১৩%, শিল্প ০.৬৪%, ব্যবসা ৯.৬৪%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২৬%, চাকরি ৭.১৭%, নির্মাণ ১৩.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১৫% এবং অন্যান্য ২.৭১%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫০.২%, ভূমিহীন ৪৯.৮%। শহরে ৩২.৭৬% এবং  গ্রামে ৫৩.৭৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, তৈলবীজ, আখ, আলু, ডাল।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কলা, কাঁঠাল, জাম।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫, হাঁস-মুরগি ৭৮, গবাদিপশু ২৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪০০ কিমি; রেলপথ ১৮ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরু ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা রাইসমিল, স’মিল, হাসকিংমিল, সুগারমিল, বিস্কুট ফ্যাক্টরি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ২৮, মেলা ১। বোচাগঞ্জ হাট ও সেতাবগঞ্জ মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, চাল, পাট, আলু, চিনি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৮.৩%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য ০.৯%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৮.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৬.৯% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২৪.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ১।

এনজিও ব্র্যাক, কেয়ার।  [রেজাউল করিম]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বোচাগঞ্জ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।