বামনা উপজেলা

বামনা উপজেলা (বরগুনা জেলা)  আয়তন: ১০১.০৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°১১´ থেকে ২২°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°০০´ থেকে ৯০°০৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কাঁঠালিয়া উপজেলা, দক্ষিণে পাথরঘাটা ও বরগুনা সদর উপজেলা, পূর্বে বিশখালী নদী ও বেতাগী উপজেলা, পশ্চিমে মঠবাড়িয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ৭৯৫৬৪; পুরুষ ৩৯৪৩৮, মহিলা ৪০১২৬। মুসলিম ৭৩৬৩৪, হিন্দু ৫৯০৭, বৌদ্ধ ২০ এবং খ্রিস্টান ৩।

জলাশয় প্রধান নদী: বিশখালী, আমুরদোন।

প্রশাসন বামনা থানা গঠিত হয় ১৯৬৮ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ৩৯ ৪৯ ৭৭৪৪ ৭১৮২০ ৭৮৭ ৭০.৫ ৬০.১
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.৪১ ৭৭৪৪ ১৪৩১ ৭০.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার(%)
পুরুষ মহিলা
ডৌয়াতলা ৭১ ৬২৮৪ ১০৪৪৯ ১০২৪৪ ৬৬.১
বামনা ২৩ ৫৮৫৬ ৩৮২৯ ৩৯১৫ ৫৯.৩
বুকাবুনিয়া ৪৭ ৭০০৫ ১০৬৯২ ১০৭০৮ ৬০.৫
রামনা ৯৫ ৫৮১৫ ৮৩৭৬ ৯০১০ ৫৮.০

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকবাহিনী এ উপজেলার কিছুসংখ্যক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। উপজেলার বুকাবুনিয়ায় ৯ নং সেক্টরের সাব-সেক্টরের হেডকোয়ার্টার অফিস ছিল। উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে আমুয়া নদী দিয়ে আসা পাকবাহিনীর একটি লঞ্চে আক্রমণ চালিয়ে শত্রু সেনাদের পর্যুদস্ত করে। ২৩ নভেম্বর বামনা দখলদার বাহিনীর কবলমুক্ত হয়। বামনায় মুক্তিযুদ্ধের ৯ নং সেক্টরের ভিত্তিস্তম্ভ নামে ১টি স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন বামনা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৪০, মন্দির ৩১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: হজরত খাজা মহিউদ্দিন হাসান চিশতীর মাযার।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬১.১%; পুরুষ ৬৩.০%, মহিলা ৫৯.৩%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৮, মাদ্রাসা ১৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: বামনা ডিগ্রি কলেজ (১৯৮২), বেগম ফয়জুন্নেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৬), ওয়াজেদ আলী খান কলেজ, হলতা ডৌয়াতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৩), সারওয়ারজান পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৪৪), আসমানুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯৬৬), বুকাবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বামনা সদর আর রশিদ ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৮৭)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ১, ক্লাব ১৪, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৫.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ৪.১৩%, শিল্প ০.৭৪%, ব্যবসা ১২.০৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.৮২%, চাকরি ৮.০৪%, নির্মাণ ১.২৯%, ধর্মীয় সেবা ০.২৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.১% এবং অন্যান্য ৬.১৫%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৭২.৫৯%, ভূমিহীন ২৭.৩১%। শহরে ৬৬.৪৩% এবং গ্রামে ৭৩.৫৯% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, গম, ভূট্টা, চীনাবাদাম, খেসারি, মুগ, ছোলা, পান।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আখ, তামাক, পাট, তিসি, তিল।

প্রধান ফল-ফলাদি কলা, কাঁঠাল, সুপারি, নারিকেল, পেঁপে।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার হাঁস-মুরগি ৪০, মৎস্য ১৫।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৯৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৪ কিমি, কাঁচারাস্তা ১৪৭ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা ইটভাটা, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, দারুশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও বেতের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১২। বামনা বাজার, ডৌয়াতলা বাজার, খোলপটুয়া হাট, বুকাবুনিয়া হাট, সাহেব বাড়ি বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য পান, খেসারি, কলা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.৫% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৭.৯% এবং অন্যান্য ২.১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৮৩.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৫.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই ।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৪, স্যাটেলাইট ক্লিনিক ৪।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, সংগ্রাম।  [এম.এ মতিন আকন্দ]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বামনা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।