বাগাতিপাড়া উপজেলা

বাগাতিপাড়া উপজেলা (নাটোর জেলা)  আয়তন: ১৩৯.৮৫ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৪°১৫´ থেকে ২৪°২২´ উত্তর অক্ষাংশ ৮৮°৫১´ থেকে ৮৯°০৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাটোর সদর উপজেলা, দক্ষিণে লালপুর উপজেলা, পূর্বে বরাইগ্রাম উপজেলা, পশ্চিমে চারঘাট, বাঘা ও পুঠিয়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৩১০০৪; পুরুষ ৬৫০৫৪, মহিলা ৬৫৯৫০। মুসলিম ১২৪২০৮, হিন্দু ৬৪২৩, খ্রিস্টান ৩৪৬, বৌদ্ধ ৪ এবং অন্যান্য ২৩। এ উপজেলায় সাঁওতাল, বাগতি, পাহাড়ি, ওরাওঁ প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় প্রধান নদী: বড়াল।

প্রশাসন বাগাতিপাড়া থানা গঠিত হয় ১৯০৬ সালে এবং ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৮৩ ১৩৪ ৯৯৭৫ ১২১০২৯ ৯৩৭ ৬২.১ ৫৬.১
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.০৬ ১৭ ৯৯৭৫ ১১০১ ৬২.১
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
জামনগর ৭৬ ৭৮১৪ ১৩৭২১ ১৪১৯৪ ৫১.৪
দয়ারামপুর ৩৮ ৬৪৮১ ১৬০০৩ ১৫৩৩১ ৬৫.৫
পাঁকা ৫৭ ৭৮২৬ ১৩২১৯ ১৩৪৪০ ৫২.০
ফাগুয়ারদিয়াড় ৪২ ৫০৯৬ ৮০৫৮ ৮২০৮ ৫২.৩
বাগাতিপাড়া ১৯ ৫০৮৮ ৯১৯৩ ৯৬৬২ ৫৬.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ দয়ারামপুর রাজবাড়ি (১৮৯১), গালিমপুর জমিদারবাড়ি (১৯২৬), বেগুনিয়া জমিদারবাড়ি (১৯১১), বড় বাঘা মাযার শরীফ (১৮৫১), নীলকুঠিবাড়ি (নওশেরা), নূরপুর জমিদারবাড়ি (১৮৮২), হযরত শাহ মোকাররম দানেশমন্দের (র:) মাযার।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসের শেষদিকে গালিমপুরের বড়াল নদীর তীরে এবং গয়লাঘোপ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে দুটি যুদ্ধ হয়।

বিস্তারিত দেখুন বাগাতিপাড়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১৮২, মন্দির ২১, গির্জা ১, মাযার ২। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: বড় বাঘা মাযার শরীফ, মইদুলহা বাসুদেবপুর গঙ্গাস্নান তীর্থ।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৬.৫%; পুরুষ ৫৯.৭%, মহিলা ৫৩.৫%। কলেজ ১৩, কারিগরি কলেজ ৫, কৃষি কলেজ ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪১, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪৬, ভোকেশনাল স্কুল ৯, নার্সারি স্কুল ৩, মাদ্রাসা ৭। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: তকিনগর আইডিয়াল হাইস্কুল ও কলেজ (১৯৯৪), বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯), জিগড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯), ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক হাইস্কুল (১৯৭৫)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী অঙ্কুর (১৯৮৩), উৎস (২০০৩), কালের গরজ (২০০৪), রক্তবীজ, উন্মেষ (২০০৪), স্মারকপত্র (২০০৪)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৩, নাট্যদল ৪, সিনেমা হল ১।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৯.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৬৩%, শিল্প ০.৮৬%, ব্যবসা ১০.৮৩%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.৮২%, চাকরি ৬.৭০%, নির্মাণ ০.৮৫%, ধর্মীয় সেবা ০.১৩%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৫% এবং অন্যান্য ৪.৭৪%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৭.০৬%, ভূমিহীন ৪২.৯৪%। শহরে ৫৭.০৬% এবং গ্রামে ৪২.৯৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, আখ, গম, ডাল, আলু, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি যব, কাউন, আউশ ধান, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, খেজুর।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১০৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৫৪ কিমি; রেলপথ ১২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা চালকল, ময়দাকল, করাতকল।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৭, মেলা ৬। সোনাপুর হাট, দয়ারামপুর হাট, লোকমানপুর হাট, নাজিরপুর বাজার, বড়পুকুরিয়া গেট বাজার, মালঞ্চি বাজার এবং বড়বাঘা মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য আখের গুড়, খেজুর গুড়, আম, কাঁঠাল।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫২.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৬.৬%, ট্যাপ ০.৫% এবং অন্যান্য ২.৯%। উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৬৭.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৩.৬% অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৮.৫% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪, কমিউনিটি ক্লিনিক ৫, ক্লিনিক ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, নিজেরা করি।  [মো. মনিরুজ্জামান]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বাগাতিপাড়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।