বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি

বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (Bangladesh Photographic Society)  দেশের প্রবীণ, নবীন, পেশাদার এবং সৌখিন আলোকচিত্রীদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত একটি সংগঠন। বাংলাদেশে ফটোগ্রাফির চর্চা এবং এর প্রসারের লক্ষ্যে ১ জানুয়ারি ১৯৭৬ তারিখে প্রবীণ ও নবীন আলোকচিত্রীদের উদ্যোগে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (বিপিএস)। বিপিএস-এর উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: দেশে আলোকচিত্র শিল্পের উন্নয়ন; জনসাধারণকে আলোকচিত্রের গুরুত্ব উপলব্ধিতে সহায়তা ও এ বিষয়ে উৎসাহিত করা এবং ফটোগ্রাফি পেশা গ্রহণে উদ্বুদ্ধ ও এর জ্ঞান প্রসারিত করা; আলোকচিত্র বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও মত বিনিময়ের উদ্দেশ্যে একত্রিত হওয়ার ব্যবস্থা করা; আলোকচিত্রীদের অধিকার ও দিক নির্দেশনা প্রণয়ন ও তাদের সংরক্ষণ করা; দেশেবিদেশে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে তুলে ধরা প্রভৃতি।

ফটোগ্রাফি জানা যে কেউ-ই নির্ধারিত আবেদনপত্রে সদস্যপদ লাভের জন্য আবেদন করতে পারেন। সংগঠনটি ফটোগ্রাফি নামে একটি মাসিক পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করে। সৌখিন ফটোগ্রাফিকে উৎসাহিত করার জন্য বিপিএস নিয়মিত মাসিক বিষয়ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এছাড়াও প্রতিবছর বার্ষিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা এবং প্রতি দুবছর অন্তর অন্তর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিপিএস-এর একটি প্রশিক্ষণ শাখা বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট। এই শাখায় একমাস মেয়াদি বেসিক ফটোগ্রাফি কোর্স করানো হয়। বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক ইনস্টিটিউট থেকে এ পর্যন্ত ৬৫টি ব্যাচে মোট ৬০০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। বিপিএস-এর যোগ্যতা ও বিচার বোর্ড থেকে ৩৫ জন আলোকচিত্রীকে বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। বিপিএস-এর পেশাদারী যোগ্যতা তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত: লাইসেন্সিয়েট (এলবিপিএস), অ্যাসোসিয়েট (এবিপিএস) এবং ফেলো (এফবিপিএস)।

বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির নিজস্ব একটি গ্রন্থাগার ও একটি গ্যালারি রয়েছে। বিপিএস-এর সদস্যরা এ পর্যন্ত প্রায় ছয় শতাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন  এম.এ. বেগ। ১৯৯৮ সালে বিপিএস তাঁকে আলোকচিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান ‘আলোকচিত্রাচার্য’ খেতাবে ভূষিত করে। বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটি ১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফিক ফেডারেশন (FIAP)-এর সদস্য পদ লাভ করে। চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও রাজবাড়ীতে বিপিএস-এর চারটি শাখা রয়েছে।  [বায়েজীদ আক্তার]