বরগুনা জেলা

বরগুনা জেলা (বরিশাল বিভাগ)  আয়তন: ১৫০৯.৪২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°৪৮´ থেকে ২২°২৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫২´ থেকে ৯০°২২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী জেলা, দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলা ও বঙ্গোপসাগর, পূর্বে পটুয়াখালী জেলা, পশ্চিমে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা।

জনসংখ্যা ৮০৪৭৭৭; পুরুষ ৩৯৩৭০৬, মহিলা ৪১১০৭১। মুসলিম ৭৪১২৭৭, হিন্দু ৬৩০৬৭, বৌদ্ধ ১২২, খ্রিস্টান ২৭২ এবং অন্যান্য ৩৯।

জলাশয় বিশখালী, বলেশ্বরী, বুড়ীশ্বর, আন্ধারমানিক ও গজালিয়া উল্লেখযোগ্য নদী।

প্রশাসন বরগুনা থানা গঠিত হয় অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষদিকে এবং মহকুমায় উন্নীত হয় ১৯৬৯ সালে। মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৪ সালে।

জেলা
আয়তন(বর্গ কিমি) উপজেলা পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম
১৫০৯.৪২ ৩৫ ২৩৮ ৪৯৩ ১০৩০৯৪ ৭০১৬৮৩ ৫৩৩ ৫৭.৬
জেলার অন্যান্য তথ্য
উপজেলার নাম আয়তন(বর্গ কিমি) পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
আমতলী ৩৯৮.৮৮ ৪৭ ১১৪ ১৮২৭৯৮ ৪৫৮ ৫২.৮
পাথরঘাটা ৩৮৭.৩৬ ৪২ ৬৬ ১৬৩৯২৭ ৪২৩ ৬০.৫
বরগুনা সদর ৪৫৪.৩৮ ১০ ৫১ ১৯১ ২৬১৩৪৩ ৫৭৫ ৫৮.৬
বামনা ১০১.০৫ - ৩৯ ৪৯ ৭৯৫৬৪ ৭৬৭ ৬১.১
বেতাগী ১৬৭.৭৫ ৫৯ ৭৩ ১১৭১৪৫ ৬৯৮ ৬০.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালের ২৯ ও ৩০ নভেম্বর পাকবাহিনী বরগুনা সদর কারাগারের অভ্যন্তরে শতাধিক নিরীহ নারী-পুরুষকে হত্যা করে এবং কারাগারের পশ্চিম পাশে গণকবর দেয়। বরগুনা শহর সন্নিকটে পাকসেনারা বেশসংখ্যক লোককে এবং ডিসেম্বর মাসে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাবার পূর্বে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। পাকবাহিনী উপজেলার বেতাগী বাজারের পূর্বাংশে আগুন ধরিয়ে দিলে দোকানপাট পুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাছাড়া পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের বদলিখালি বাজারে সংঘটিত সম্মুখ লড়াইয়ে কিছুসংখ্যক পাকসেনা ও রাজাকার নিহত হয় এবং পাকবাহিনীর এমভি মুনির নামক লঞ্চটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। বরগুনা জেলা কারাগার সংলগ্ন স্থান, পাথরঘাটা লঞ্চঘাট সংলগ্ন স্থান ও প্রধান জেলখানার সন্নিকটে ৩টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে; বামনায় মুক্তিযুদ্ধের ৯ নং সেক্টরের ভিত্তিস্তম্ভ এবং আমতলীতে ৩টি স্মৃতিফলক ৩টি স্থাপিত হয়েছে।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৭.৬%; পুরুষ ৫৯.২%, মহিলা ৫৬.১%। আইন কলেজ ১, কলেজ ২৫, এমএড কলেজ ১, বেসরকারি বিএড কলেজ ৩, বেসরকারি ভোকেশনাল স্কুল ৪, কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ ১, সরকারি পিটিআই ১, সরকারি যুব উন্নয়ন কেন্দ্র ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৬২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭২৭, মাদ্রাসা ১৩২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬২.৬৭%, অকৃষি শ্রমিক ৪.৪৮%, শিল্প ০.৭%, ব্যবসা ১৩.৩৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.০৩%, চাকরি ৬.৭২%, নির্মাণ ১.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.২১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২২% এবং অন্যান্য ৮.১৩%।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী দৈনিক: দ্বীপাঞ্চল, সৈকত সংবাদ; পাক্ষিক: বরগুনা; সাপ্তাহিক: বরগুনা কণ্ঠ, বরগুনা বার্তা, ভাটিয়ালি, পায়রা পাড়, সাপ্তাহিক বরগুনা, বেতাগীর কথা; অবলুপ্ত: দৈনিক আজকের কণ্ঠ, বরগুনার কণ্ঠ।

লোকসংস্কৃতি জারিগান, সারিগান, কবিগান, কীর্তন, হয়লা, লোকগাঁথা, লোকনাট্য উল্লেখযোগ্য।

দর্শনীয় স্থান বিবিচিনি শাহী মসজিদ (বেতাগী), বৌদ্ধ মন্দির (তালতলী) ও বৌদ্ধ একাডেমি। [মনির হোসেন কামাল]

আরও দেখুন সংশ্লিষ্ট উপজেলা।

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; বরগুনা জেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭; বরগুনা জেলার উপজেলাসমূহের সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।