ফাতিহা

ফাতিহা শব্দটি  আরবি, অর্থ প্রারম্ভিকা, উন্মুক্তকারী ও উদ্বোধনকারী। মুসলিম সমাজে এর ব্যবহার দ্বিবিধ: কুরআনের সূরা অর্থে এবং মৃত ব্যক্তির উদ্দেশে  কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়া অর্থে। আল-কুরআনের সর্বপ্রথম এবং সর্বজন পরিচিত সূরার নাম ফাতিহা। একে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়, যথা: ফাতিহাতুল্ কিতাব (গ্রন্থের প্রারম্ভিকা), সূরাতুদ্ দু‘আ (প্রার্থনা সূরা), উম্মুল কিতাব (গ্রন্থসার), সাব‘উলমাছানী (বার বার পঠিত সাতটি আয়াত) ইত্যাদি। এতে সাতটি আয়াত আছে এবং সেগুলি  হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর নুবুওয়তলাভের প্রাথমিক পর্যায়ে অবতীর্ণ হয়। নামাযের প্রত্যেক রাকা‘আতে সূরা ফাতিহা পাঠ আবশ্যক।

মৃত ব্যক্তির জন্য ঈসালে ছওয়াব বা পুণ্য পৌঁছানোর উদ্দেশে কুরআন তেলাওয়াত ও সদকা খয়রাত বা বিশেষ ভোজের আয়োজনপূর্বক যে দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালিত হয় তা ফাতিহা নামে পরিচিত। কুরআন তেলাওয়াতের মধ্যে সূরা ফাতিহা, সূরা বাকারার প্রথম কয়েক আয়াত, আয়াতুল কুরসী, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, সূরা ইয়াসীন, সূরা মূলক, সূরা তাকাস্বুর ও সূরা ইখলাস এগারো অথবা সাতবার, ন্যূনপক্ষে তিনবার পাঠ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে সূরা ফাতিহা অবশ্যপাঠ্য বলেই এর নাম হয়েছে ফাতিহা। কখনো কখনো তা ফাতিহাখানী নামেও অভিহিত হয়। ইরান, মধ্য এশিয়া ও বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর সাধারণত চতুর্থ দিনে ফাতিহা অনুষ্ঠানকে  কুলখানি, ৪০তম দিবসকে চেহলাম বা চল্লিশা বলা হয়।  [মুহাম্মদ আবদুল বাকী]