পিরোজপুর সদর উপজেলা

পিরোজপুর সদর উপজেলা (পিরোজপুর জেলা)  আয়তন: ১৬৬.৮১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°২৯´ থেকে ২২°৪১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৩´ থেকে ৯০°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা, দক্ষিণে জিয়ানগর ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, পূর্বে নেছারাবাদ, কাউখালী (পিরোজপুর) ও ভান্ডারিয়া উপজেলা, পশ্চিমে মোড়েলগঞ্জ ও কচুয়া (বাগেরহাট) উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৬৩৪৭০; পুরুষ ৮০৭০৪, মহিলা ৮২৭৬৬। মুসলিম ১৩৬৩৯৯, হিন্দু ২৬৯৯৩, বৌদ্ধ ৬০, খ্রিস্টান ১০ এবং অন্যান্য ৮।

জলাশয় প্রধান নদী: বলেশ্বরী, কালিগঙ্গা, কচা; জুজখোলা খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন থানা গঠিত হয় ১৭৯০ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬৪ ৯৮ ৬০০৫৬ ১০৩৪১৪ ৯৮০ ৭৭.৮ ৬৫.৮
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
২৯.৪৯ ৩০ ৬০০৫৬ ২০৩৬ ৭৭.৮
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৫.৮৯ ৫২১৭ ৮৮৬ ৬৫.০৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
কদমতলা ২৫ ৫২১৪ ৭১৩১ ৭১৯৪ ৬৯.৮
কলাখালী ৩৪ ৪০৫৯ ৫১১৭ ৫২৬১ ৬৯.২
টোনা ৯৪ ৩৬০৭ ৬২৮৪ ৬৫৪১ ৬৯.০
দুর্গাপুর ১৭ ৪৬৮৭ ৭১৯০ ৭৫০৭ ৬৩.৪
শঙ্করপাশা ৬৯ ৫৪০৫ ১০৮১৮ ১১৪৪৩ ৬৩.৬
সারিকতলা ৭৭ ৪৯৩৫ ৫৬৪১ ৫৯৮৩ ৬৫.৪
সিকদার মল্লিক ৮৬ ৬২২৬ ৮৪৭৫ ৮৮২৯ ৬৩.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ রায়েরকাঠি জমিদার বাড়ি ও কালীমন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে পাকসেনাদের সম্পর্কে মুক্তিবাহিনীকে তথ্য সরবরাহের অপরাধে ভাগীরথী (বীরাঙ্গনা)-কে পাকসেনারা নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করে। তাঁকে জীবন্ত অবস্থায় মোটর সাইকেলের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিচঁড়ে মৃত্যু ঘটিয়ে তার লাশ বলেশ্বর নদীতে ফেলে দেয়। উপজেলার বাঘমারাতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। বলেশ্বর খেয়াঘাটে ১টি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন পিরোজপুর সদর উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৬।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান  মসজিদ ৩৫১, মন্দির ১৪৫, মাযার ১, তীর্থস্থান ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: পিরোজপুর জামে মসজিদ, পিরোজপুর কালীবাড়ি, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৭০.৩%; পুরুষ ৭০.৮%, মহিলা ৬৯.৮%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পিরোজপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ,  পিরোজপুর সরকারি বালক বিদ্যালয় (১৯০৯), পাড়েরহাট রাজলক্ষ্মী মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৫), পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৯), কদমতলা জর্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১২), পিরোজপুর টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৭) ও খানাকুনিয়ারী পি ই ফাজিল মাদ্রসা (১৯২০)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রেরি ৯, ক্লাব ৩৫, নাট্যমঞ্চ ১, নাট্যদল ১,  মহিলা সংগঠন ৭, সিনেমা হল ৩।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৪৯.৮৮%, অকৃষি শ্রমিক ৫.৮৯%, শিল্প ১.৫৪%, ব্যবসা ১৯.০৫%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৩.০৩%, চাকরি ১.৮৭%, নির্মাণ ০.৩৪%, ধর্মীয় সেবা ৯.৫৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৪৪% এবং অন্যান্য ৮.৪০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৫.৮৭%, ভূমিহীন ৪৪.১৩%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, আখ, ডাল, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি আউশ ধান, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি কলা, পেঁপে, নারিকেল, তরমুজ, সুপারি, আমড়া।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার এ উপজেলায় মৎস্য, গবাদিপশু ও  হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৫০ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৬৫ কিমি, কাঁচারাস্তা ১২৫ কিমি; নৌপথ ৪২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল, ময়দাকল, বরফকল, করাতকল, ছাপাখানা, বেকারি, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প লৌহশিল্প, তাঁতশিল্প, বাঁশের কাজ, বিড়িশিল্প।

হাটবাজার ও মেলা পিরোজপুর বাজার, কদমতলা বাজার ও ঘোষের হাট উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  কলা, নারিকেল, পান, সুপারি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৫৫.৯% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৭৫.৯%, ট্যাপ ১৯.৫% এবং অন্যান্য ৪.৬%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা ৮৯.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৯.১% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ২, ক্লিনিক ৪, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ১১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, কেয়ার, প্রশিকা।  [স্বপ্না রায়]

তথ্যসূত্র  আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পিরোজপুর সদর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।