পাথরঘাটা উপজেলা

পাথরঘাটা উপজেলা (বরগুনা জেলা)  আয়তন: ৩৮৭.৩৬ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৫৮´ থেকে ২২°১৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°৫৩´ থেকে ৯০°০৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে মঠবাড়ীয়া ও বামনা উপজেলা, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে বরগুনা সদর উপজেলা ও বিশখালী নদী, পশ্চিমে শরণখোলা উপজেলা ও হরিণঘাটা নদী।

জনসংখ্যা ১৬৩৯২৭; পুরুষ ৮০৫৪৪, মহিলা ৮৩৩৮৩। মুসলিম ১৪৬৮৬৩, হিন্দু ১৭০৩১, বৌদ্ধ ১, খ্রিস্টান ৩১ এবং অন্যান্য ১।

জলাশয় বিশখালী, হরিণঘাটা ও বলেশ্বরী নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন পাথরঘাটা থানা গঠিত হয় ১৯২৫ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮২ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৪২ ৬৬ ২৮৫২১ ১৩৫৪০৬ ৪২৩ ৬৭.৪ (২০০১) ৫৯.৩
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৩.১১ (২০০১) ১৭১৭৭ ১০৮৯ (২০০১) ৭২.৫
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৩.৯৫ (২০০১) ১১৩৪৪ ৪৫৫ (২০০১) ৫৬.৬
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
পাথরঘাটা ৭১ ১২৫২১ ১৪২৪২ ১৪২৪৯ ৫৭.৬
কালমেঘা ৩৫ ১২৪৩১ ১২৫৯৫ ১৩২৯৯ ৫৩.৬
কাকচিড়া ২৩ ৬৫১৯ ১০১৫৮ ১০৫৬২ ৬০.৫
রায়হানপুর ৮৩ ৬১১৪ ৭০১৪ ৭৭৯৬ ৫৮.৮
চরদুআনি ১১ ৮৯২১ ১২২৪৭ ১২৩১৬ ৫৪.২
কাঁঠালতলী ৪৭ ৫৭৯৩ ৯৫৩৬ ১০২৫২ ৬৭.৫
নাচনাপাড়া ৫৯ ৫৫৫১ ৬১১৫ ৬৩৬৯ ৬৭.৪

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৪৩, মন্দির ৫৬।

মুক্তিযুদ্ধ পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ১৫ মে পাথরঘাটা প্রবেশ করে এবং ডহরপুর, বাদুরতলা ও কোবালিয়া গ্রামে তান্ডব চালিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে। মুক্তিযোদ্ধারা ছোটখাটো প্রতিরোধ সংঘটিত করলেও উপজেলায় পাকসেনাদের সঙ্গে তাদের সামনা-সামনি কোনো যুদ্ধ হয়নি।

বিস্তারিত দেখুন পাথরঘাটা উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৫।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৬০.৫%; পুরুষ ৬০.৩%, মহিলা ৬০.৬%। কলেজ ৩, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৪। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: পাথরঘাটা কেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯২৯)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী সংকল্প সংলাপ (নিয়মিত), পাথরঘাটা বার্তা (অবলুপ্ত)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান  লাইব্রে্রি ১, ক্লাব ৩৫, মহিলা সংগঠন ৭, সিনেমা হল ৫।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬০.৩%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮৭%, শিল্প ০.৫৫% ব্যবসা ১৫.৮৮%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.২১%, চাকরি ৬.৪২%, নির্মাণ ১.৪৬%, ধর্মীয় সেবা ০.১৯%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.২৫% এবং অন্যান্য ৮.৮৭%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, খেসারি, মুগ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি মিষ্টি আলু, ফুটি, তরমুজ, তিল, তামাক।

প্রধান ফল-ফলাদি কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, আনারস, কাগজিলেবু।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৬১, গবাদিপশু ৬, হাঁস-মুরগি ১০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৬৭ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ৪৭.৩৯ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৭৪ কিমি; নৌপথ ৮২ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা স’মিল, ধানকল, বরফকল, ওয়েল্ডিং কারখানা।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, সূচিশিল্প, বাঁশ ও কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ১৬। পাথরঘাটা, কাকচিড়া, রূপদোন, হরিণঘাটা এবং চরদুআনি বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ধান, ইলিশ মাছ, চিংড়ি পোনা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩১.০% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৪৯.৮%, ট্যাপ ৬.৪% এবং অন্যান্য ৪৩.৮%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৭.৭% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২১.২% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১.১% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ১, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ৫, ক্লিনিক ১।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর জলোচ্ছ্বাসে এবং ২০০৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর টর্নেডোতে উপজেলায় ৪ শতাধিক প্রাণহানির ঘটনাসহ ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও  আশা, কারিতাস, ব্র্যাক, প্রশিকা। [সফিউদ্দিন আহমেদ]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; পাথরঘাটা উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।