নিরাপদ খাদ্য

নিরাপদ খাদ্য আধুনিক জীবনে শিল্পজাত খাদ্য একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। এ খাদ্যকে স্বাভাবিক এবং ভেজাল ও অন্যান্য দূষণ থেকে নিরাপদ অবস্থায় বিতরণ এখন একটি বিশ্ব সমস্যা। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ছাড়াও নানা কারণে খাদ্য দূষিত হতে পারে। খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহণ, খাদ্যগ্রহণ প্রক্রিয়ার যে কোন পর্যায়ে শিল্পায়িত খাদ্য খাদ্যের অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তার দ্বার পর্যন্ত খাদ্যের গুণগত মান নিশ্চিত রাখা একটি বড় সরকারি ও বেসরকারি দায়িত্ব।

খাদ্যশিল্পের দায়িত্ব উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানসমূহ এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য আধুনিক মান নির্ধারণ ব্যবস্থাপনা করতে আইনগতভাবে বাধ্য। এ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার প্রধান তিনটি পদ্ধতি হলো:

উত্তম উৎপাদন পদ্ধতি (Good Manufacturing Practice or GMP)-এর আওতায় ঐ সমস্ত পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে যার ফলে খাদ্যের সঙ্গতিপূর্ণ মানসহ নিরাপদের বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রমাণ রয়েছে।

প্রক্রিয়াজাতজনিত সংকট নির্ধারণ এবং এর প্রতিটি ধাপের নিয়ন্ত্রণ (Hazard Analysis Critical Control Points সংক্ষেপে HACCP)। খাদ্যের মান ও এর নিরাপদ হওয়ার বিষয়টি সনাতনী পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ প্রক্রিয়াকৃত খাদ্যের মধ্যেই সীমিত ছিল। HACCP সাম্প্রতিককালে উদ্ভাবিত একটি সক্রিয় কারিগরি পদ্ধতি। এ পদ্ধতি প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রতিটি পর্যায়ে সম্ভাব্য সমস্যা ও তা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।

মান নিশ্চয়তার বিধান আর্ন্তজাতিক মান নির্ধারণ সংস্থা (International Standards Organization ISO 9000) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্ধারিত মানের (EU 29000) মাধ্যমে খাদ্য শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানসমূহ এই দুটি সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করে থাকে বা করা যায়। এ ধরনের কর্মসূচির কার্যকারিতা নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ দ্বারা নিয়মিতভাবে মূল্যায়িত হয়।

যে সমস্ত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রতিষ্ঠান এ ধরনের মান ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুসরণ করে তারা এ প্রক্রিয়ায় সরবরাহকারী সূত্র (যেমন কৃষক এবং পাইকারি কাঁচামাল সরবরাহকারি সংস্থা), পরিবহণ সংস্থা, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদেরও জড়িত করে। খাদ্য উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত উৎপাদিত খাদ্য বাজারজাত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মোড়ক ও আধার ব্যবহূত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে উৎপাদিত ও প্রক্রিয়াকৃত খাদ্যসামগ্রী উত্তম অবস্থায় ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে। পরিবহণ, পাইকারি গুদাম, খুচরা বিক্রয়স্থল এবং বসতবাড়ি পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্যের মান ও নিরাপদ হওয়ার বিয়ষটি নিশ্চিত হয়ে থাকে। মোড়ক বা আধারের সাথে যুক্ত লেবেলে খাদ্য সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি ছাড়াও এর ফলে খাদ্য সংরক্ষণ সহজতর হয়। অন্যদিকে সাধারণত মোড়ককৃত বা টিনজাত খাদ্যের উৎপাদনের তারিখসহ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ঠিকানাও দেওয়া হয়। ফলে, এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগের বিষয় প্রক্রিয়াজাতকরণ, পরিবহণ ও খুচরা বিক্রেতারা মালামাল সংক্রান্ত সম্ভাব্য সঙ্কটও সমাধান করতে সক্ষম হয়।

ফসল কাটা থেকে খাদ্য গ্রহণ করার যে কোন স্তরে রাসায়নিক দ্রব্যাদি এবং জীবাণু দ্বারা বিষাক্ত বা দূষিত হতে পারে। সাধারণত নিরাপদ খাদ্যের ঝূঁকি দুই ধরনের:

ক.   জীবাণু সংক্রান্ত দূষণ (যথা বিভিন্ন ধরনের জীবাণু, ছত্রাক ইত্যাদি)। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ কারণে দূষিত খাদ্য মানবদেহে বিভিন্ন বিরূপ উৎসর্গের সৃষ্টি করে।

খ.    রাসায়নিক দ্রব্যাদি দ্বারা দূষণ। এর মধ্যে রয়েছে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত দ্রব্যাদি, পশুর ঔষধের অবশিষ্টাংশ, ভারি ধাতু অথবা অন্যান্য অবশিষ্টাংশ যা কারো অগোচরে খাদ্যে অনুপ্রবেশ করে।

কোন দূষণ সৃষ্টিকারী দ্রব্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিপদ ডেকে নিয়ে আসবে কিনা তা অনেকগুলি কারণের উপর নির্ভরশীল। দূষণ সক্ষম বস্ত্তর বিষ এবং এর গ্রহণ ছাড়াও দূষিত খাদ্যে বিষের মাত্রা ও পরিমাণ এবং সময়কালসহ অন্যান্য কারণ। বিষের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া রোধ করার ক্ষমতাও ব্যক্তিভেদে ভিন্নতর হয়। এ ছাড়া রয়েছে আরেকটি জটিল কারণ। পশু সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ তথ্যাদি মানবদেহে যে একই ধরনের ক্ষতি করবে তার অনিশ্চয়তা।

নিরাপদ খাদ্য ক্রমবর্ধমানভাবে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। বিশ্বব্যাপী সব সরকারই নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য বহুবিধ প্রচেষ্টার গতি তীব্র করছে। এর কারণ হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সমস্যার বৃদ্ধিসহ ভোক্তাদের আশঙ্কা। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে দূষিত খাদ্যজনিত রোগ বর্তমানে জনস্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান সমস্যা হিসাবে চিহ্নিত।

দূষিত খাদ্যগ্রহণের জন্য রোগের মাত্রার গভীরতা ও ব্যাপকতা নির্ণয় করা কঠিন। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, ২০০৫ সালেই উদরাময় রোগে বিশ্বের ১.৮ মিলিয়ন মানুষ মূত্যুবরণ করেছে। দূষিত খাদ্যগ্রহণ ও পানি পান করা এ ধরনের মূত্যুর সিংহভাগ হবে। এছাড়া, শিশুদের অপুষ্টির একটি প্রধান কারণ উদারাময় রোগ।

শিল্পোন্নত দেশে খাদ্যবাহিত রোগের সংখ্যা প্রতিবছর শতকরা ৩০ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে তথ্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর প্রায় ৭৬ মিলিয়ন মানুষ দূষিত খাদ্যের ফলে রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যায়। ফলে ৩ লাখ ২৫ হাজার রোগী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গিয়েছে। প্রতিবছর এ ধরনের রোগীর মূত্যুর সংখ্যা হবে ৫ হাজার। অনুন্নত দেশসমূহে এ সংক্রান্ত তথ্যের দূর্বলতা রয়েছে। তবে একথা অনস্বীকার্য যে, এ সমস্ত দেশেই দূষিত খাদ্যজনিত রোগের প্রকোপ ও ব্যাপকতা অধিকতর। বহু অনুন্নত দেশে উদারাময় রোগের প্রকোপ এর প্রমাণ বহন করে।

অধিকাংশ দেশে দূষিত খাদ্যজনিত রোগের ঘটনা এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগের তথ্য পাওয়া দুস্কর। তবে এ কথা ঠিক যে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় যে, ১৯৯৪ সালে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই salmonellosis জীবানু বহনকারী আইসক্রিম খাওয়ার ফলে ২,২৪,০০০ ব্যক্তি রোগে আক্রান্ত হয়। ১৯৮৮ সালে দূষিত শামুক বা গলদা চিংড়ি খেয়ে চীনে প্রায় ৩ লাখ মানুষ রোগাক্রান্ত হয়।

২০০৮ সালে চীনে প্রস্তুতকৃত কয়েকটি সংস্থার দূষিত গুড়াদুধ পান করে বহু শিশু রোগাক্রান্ত হয়। কারণ, ঐ ধরনের শিশুখাদ্যে মেলামাইনের মাত্রা বেশি ছিল। বাংলাদেশও এ দুধ আমদানির মাধ্যমে আসে। সম্ভাব্য বিপদ এড়ানোর জন্য সরকার ঐ দুধসহ উন্নত দেশের কয়েকটি দুধ আমদানি নিষিদ্ধ করে দেয়। এর ফলে আমদানিকারকরা হাইকোর্টে মামলা করলে আদালতের নির্দেশে সবকয়টি ব্রান্ডের নিষিদ্ধ দুধ বিদেশে আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবোরটরিতে পরীক্ষার পর আমদানির জন্য কয়েকটি ব্যান্ডকে ছাড়পত্র প্রদান করে।

অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাথে অংশিদারত্বের ভিত্তিতে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (WHO) নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক নীতি প্রনয়ণের কাজে লিপ্ত। বিভিন্নমূখী পারদর্শীতা ব্যবহার করে এ সংক্রান্ত খাদ্য উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রতিস্তরে ব্যাপৃত হবে। এ সংস্থার খাদ্য অধিদপ্তর নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করাসহ উত্তম খাদ্য প্রস্ত্তত প্রণালি, খুচরা বিক্রেতা ও ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। ভোক্তার প্রশিক্ষণ এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনা দূষিত খাদ্যজনিত রোগ প্রতিরোধ করার অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে একটি উত্তম উপায়।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থা মানুষ ও পশুর মধ্যে দূষিত খাদ্য বহনকারী রোগ প্রতিরোধের জন্য সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারে নজরদারি খাদ্যদূষণে সক্ষম বস্ত্তর নিবিড় পরীবিক্ষণ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করার প্রয়াস নিয়েছে। এ লক্ষ্যে সদস্য দেশসমূহের সহযোগিতা এ সংস্থার কাম্য। উদ্দেশ্য হচ্ছে আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত নিদের্শনার মাধ্যমে এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। এ সংস্থা অংশগ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থার সংখ্যাবৃদ্ধিসহ সহায়তা নিয়ে বিশ্বব্যাপি একটি নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে, বিশেষ করে অনুন্নত দেশসমূহে। নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক জনস্বাস্থ্যের অবদান রাখার জন্য এ সংস্থা খাদ্য সংক্রান্ত কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা একটি নতুন উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। ফলে নিরাপদ খাদ্য সংক্রান্ত কার্যাবলীর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি স্থাপন করা হবে। এ লক্ষ্যে এ সংস্থাও বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সমন্বয়ে দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে একটি পরামর্শক বোর্ড গঠিত হয়েছে। খাদ্যে জীবানু সংক্রান্ত দূষণের মাত্রা নির্ণয় হবে এ ব্যবস্থাপনা কাঠামোর একটি মূল বিষয়।

বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা Codex Alimentarius Commission-এর নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক মান, নির্দেশনা ও সুপারিশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত। এর উন্নতিকল্প বিশ্ব খাদ্য সংস্থা এ কাজে তাদের অংশগ্রহণের মাত্রা আরও নিবিড় করেছে।

বর্তমানে বায়োটেকনোলজি বিশ্বের উন্নত ও অনুন্নত দেশসমূহের জন্য একটি প্রধান বিষয় হিসাবে গণ্য। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য ও এহেন খাদ্যে পুষ্টির গুণাগুণের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করার সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। এ প্রযুক্তিপ্রসূত খাদ্যের ঝুঁকি, উপকারিতা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে একটি জ্ঞানসম্পন্ন ভিত্তি স্থাপন করাই মূল উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য সংক্রান্ত আইন ও বিধি  বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ-১৯৫৯ এবং বিশুদ্ধ খাদ্য বিধিমালা-১৯৫৭; পশুজবাই (বিধিনিষেধ) এবং মাংস নিয়ন্ত্রণ (সংশোধনী) অধ্যাদেশ-১৯৮৩; বিএসটিআই অধ্যাদেশ-১৯৮৫ (সংশোধনী আইন, ২০০৩); ধ্বংসকারী পোকামাকড় বিধি (প্লান্ট কোয়ারেনটাইন)-১৯৬৬ (১৯৮৪ পর্যন্ত সংশোধিত); কৃষিপণ্য বাজার আইন-১৯৬৪ (সংশোধিত ১৯৮৫); মৎস সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন-১৯৫০ (সর্বশেষ সংশোধনী ১৯৮৫); সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশ-১৯৮৩ এবং বিধি-১৯৮৩; মৎস্য ও মৎসজাত পণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) বিধি-১৯৯৭; জরুরি পণ্য আইন-১৯৫৭, ১৯৫৮ ও ১৯৬৪; খাদ্য বা বিশেষ আদালত আইন-১৯৫৬; খাদ্যশস্য সরবরাহ (ক্ষতিকর কার্যাবলী নিরোধ) অধ্যাদেশ-১৯৫৬; পোকামাকড় ধ্বংসকারী ঔষধ অধ্যাদেশ-১৯৭১ এবং এ সংক্রান্ত বিধি-১৯৮৫।

নীতি যোগাযোগ (Policy Linkages) খামার থেকে টেবিল পর্যন্ত ব্যাপৃত নিরাপদ খাদ্যের গুরুত্ব সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল নীতিতে যথাযোগ্য গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ নীতিগুলি হচ্ছে: বাংলাদেশ পরিবেশ নীতি-১৯৯৮; বাংলাদেশ খাদ্য ও পুষ্টি নীতি-১৯৯৭; এবং জাতীয় পুষ্টি নীতি-১৯৯৭; বাংলাদেশ খাদ্য নীতি-১৯৯৮; ব্যাপক খাদ্য নিরাপত্তা নীতি-২০০১ এবং নতুন জাতীয় খাদ্য নীতি-২০০৬; জাতীয় কৃষি নীতি-১৯৯৯, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য নীতি-২০০১; এবং রপ্তানি নীতি ইত্যাদি। এ ধরনের গুরুত্ব দেওয়া সত্ত্বেও নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক আইনে যথা বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ-১৯৫৯ এবং এর আওতায় বিধিতে Codex Alimentarius-এ বিধৃত মান, নির্দেশনা এবং ব্যবহারিক পদ্ধতিকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করা হয় নি। এর মধ্যে HACCP রয়েছে। কিন্তু মৎস ও মৎসজাত পণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮৩) এবং বিধিতে HACCP-এর নীতিসমূহের স্বীকৃতি রয়েছে। বিএসটিআইও HACCP-এর মান গ্রহণ করেছে।

২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকার নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। দুটি উন্নয়ন সহযোগীর অর্থ সহায়তা এ প্রকল্প ও স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্প সমাপ্তির পর আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী করণসহ খাদ্য পরীক্ষাগারসমূহের উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।

খাদ্যের মান  বিশুদ্ধ খাদ্য বিধি (১৯৬৭) এর আওতায় সর্বমোট ১০৭ খাদ্যসামগ্রীকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিএসটিআই ১৯০টি খাদ্যের মান নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ৫২টির জন্য ছাড়পত্র গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। ২৮টি Codex মান স্বীকৃতি পেয়েছে।  [এ.এম.এম শওকত আলী]