গোঁসাইরহাট উপজেলা

গোঁসাইরহাট উপজেলা (শরিয়তপুর জেলা) আয়তন: ১৯৬.৭২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°০৫ থেকে ২৩°১০ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২০´ থেকে ৯০°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে মুলাদী ও হিজলা উপজেলা, পূর্বে হাইমচর উপজেলা, পশ্চিমে কালকিনি উপজেলা।

জনসংখ্যা ১৫৭৬৬৫; পুরুষ ৭৬০৭৬, মহিলা ৮১৫৮৯। মুসলিম ১৫১৮৭৩, হিন্দু ৫৭৫৩, বৌদ্ধ ১০, খ্রিস্টান ১৮ এবং অন্যান্য ১১।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা ও জয়ন্তী নদী।

প্রশাসন গোঁসাইরহাট থানা গঠিত হয় ১৯২১ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১০৭ ২২১ ১০৯৬৯ ১৪৬৬৯৬ ৮০১ ৫৮.৭ ৪০.৯
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১.৪৭ ১০৯৬৯ ৭৪৬২ ৫৮.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
আলাওলপুর ১১ ১০০৬৮ ৯০৭৬ ৯৪৮০ ৩২.৫
ইদিলপুর ৩৫ ৬৯৫৩ ১৮১০৫ ১৯৫৩৬ ৪৮.৯
কোদালপুর ৪৭ ৯৬২০ ৯৮৭৬ ১০৪৭০ ৩৫.৮
গোঁসাইরহাট ২৩ ৪০৫৮ ৫৫১২ ৫৯৯৫ ৪৩.৯
নলমুরি ৭১ ২৪২৬ ৬২২৫ ৭৩০৩ ৩৭.৮
নাগের পাড়া ৫৯ ৬২৫৬ ১২২৬৩ ১৩৬৪০ ৫১.২
সামন্তসার ৮৩ ২০৯৯ ৪১৯৫ ৪৬৭৬ ৪৯.৯
কুচাইপট্টি ৫১ ৭১৩১ ১০৮২৪ ১০৪৮৯ ৩১.৩

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ হাটুরিয়া মিয়াবাড়ী জামে মসজিদ (১৮৭৮)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে এ উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকারা এ উপজেলায় বহুসংখ্যক নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। উপজেলায় ১টি স্মৃতিসৌধ স্থাপিত হয়েছে।

বিস্তারিত দেখুন গোঁসাইরহাট উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ৩।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ৪৫০, মন্দির ৩০, আশ্রম ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪২.১%; পুরুষ ৪৩.০%, মহিলা ৪১.৩%। কলেজ ১, প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ১, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৭, কমিউনিটি বিদ্যালয় ১৪, কিন্ডার গার্টেন ৫, মাদ্রাসা ৫। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: শামসুর রহমান ডিগ্রী কলেজ, ইদিলপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৯৪), নাগের পাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইদিলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ২, লাইব্রেরি ২, কমিউনিটি সেন্টার ১, সংগীত একাডেমি ১, শিল্পকলা একাডেমি ১, সিনেমা হল ১, অডিটরিয়াম ১, সাংস্কৃতিক সংগঠন ১, মহিলা সংগঠন ২, খেলার মাঠ ২।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭১.০৮%, অকৃষি শ্রমিক ৩.৮৮%, শিল্প ০.৫২%, ব্যবসা ৯.৮৬%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ১.২৯%, চাকরি ৪.৭০%, নির্মাণ ০.৬৬%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.৫০% এবং অন্যান্য ৭.২০%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬৩.৬১%, ভূমিহীন ৩৬.৩৯%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, পান, সরিষা, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিশি, কালোজিরা, মিষ্টি আলু।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ২৪, গবাদিপশু ২৮, হাঁস-মুরগি ৭০।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ১২৪.৩৩ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৩৬৪ কিমি; নৌপথ ৭ কিমি। কালভার্ট ৩১২, ব্রিজ ১৭০।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি।

শিল্প ও কলকারখানা আইসক্রীম ফ্যাক্টরী, ধান কল প্রভৃতি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, সূচিশিল্প প্রভৃতি।

হাটবাজার, মেলা  হাটবাজার ২০, মেলা ২। গোঁসাইরহাট, হাটুরিয়া বাজার, নাগের পাড়া বাজার উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য  পান, পাট, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৯.১% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৯৩.৫%, ট্যাপ ০.৬% এবং অন্যান্য ৫.৯%। এ উপজেলার পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক পাওয়া গেছে এমন অগভীর নলকূপের সংখ্যা ১৪০০ বা শতকরা হার ৫০।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭৮.৯% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ১৮.৭% পরিবার অস্বাস্থাকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২.৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৬, ক্লিনিক ৮, দাতব্য চিকিৎসালয় ১, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৫, পশু চিকিৎসা কেন্দ্র ১।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, এসকেএস, এসডিএস, নুসা। [মাজেদুল হক]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; গোঁসাইরহাট উপজেলার মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন ২০১০।