কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা (কুমিল্লা জেলা)  আয়তন: ১৩৬.৬১ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২৩°১৩´ থেকে ২৩°২৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৬´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা, দক্ষিণে লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলা, পূর্বে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে বরুড়া উপজেলা।

জনসংখ্যা ২৫৮২৭৮; পুরুষ ১২৮৬৭৬, মহিলা ১২৯৬০২। মুসলিম ২৪৮৪২০, হিন্দু ৯৪৩৯, বৌদ্ধ ২৬১, খ্রিস্টান ৬৯ এবং অন্যান্য ৮৯।

জলাশয় ডাকাতিয়া নদী ও ছোট ফেনী নদী উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল সাবেক কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ৬টি ও লাকসাম উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে সদর দক্ষিণ উপজেলা গঠিত হয়।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
১৬৬ ২০৭ ১১১৮৯১ ১৪৬৩৮৭ ১৮৯১ ৫৩.২ ৫৩.৮
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ৬৩ ১০৩৭১০ - ৬৯.৩
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
- ৮১৮১ - ৩৭.২
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
গলিয়ারা ৫৮ ৫৪০৪ ১৪৬৯৩ ১৫৮৭২ ৫৮.৯
চৌয়ারা ৩৯ ৫৬৩৪ ১১২৮৩ ১২৫৯৪ ৫৭.৪
পশ্চিম জোরকরণ ৮০ ৩১৬৩ ১১৯০৬ ১২১১৪ ৪৭.৬
পূর্ব জোরকরণ ৭৩ ৩৩২৮ ৯৯৮৪ ১০৯৩৯ ৪৯.৩
বড়পাড়া ২৪ ৬২৪৯ ১৫৭৭৫ ১৬৯০৩ ৫৫.৭
বিজয়পুর ৩৫ ২২৯৬ ১০৮৩৯ ১১৬৬৬ ৪৮.১

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ কনেশতলা বড় গম্বুজ মসজিদ, আলীশ্বর বৌদ্ধমন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকসেনারা উপজেলার কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং ৫/৭ জন নিরীহ গ্রামবাসিকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার মাদারীপুর গ্রামে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উভয় পক্ষের বেশসংখ্যক সদস্য হতাহত হয়। মুক্তিবাহিনীর ২নং সেক্টরের ৬টি সাব-সেক্টরের মধ্যে অন্যতম নির্ভয়পুর ও ধনপুর সাব-সেক্টরের অধিকাংশ অপারেশন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায় সংঘটিত হয়েছিল। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকসেনাদের যুদ্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দিশাবন্দ, লালমাই, ফুরতলী এবং হাড়াতলির যুদ্ধ।

বিস্তারিত দেখুন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৫.১%; পুরুষ ৫৫.৬%, মহিলা ৫৪.৭%। কলেজ ৯, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৩, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৫৮, মাদ্রাসা ৫৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা  প্রতিষ্ঠান: চৌয়ারা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২)।

দর্শনীয় স্থান লালমাই পাহাড়, কেন্টিসিসিএ পার্ক।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫১.১৯%, অকৃষি শ্রমিক ৩.০৬%, শিল্প ০.৮৮%, ব্যবসা ১৩.১৭%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ৫.০৮%, চাকরি ১১.৪১%, নির্মাণ ১.৯২%, ধর্মীয় সেবা ০.৩২%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ১.৯৯% এবং অন্যান্য ১০.৯৮%।

কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৬১.১১%, ভূমিহীন ৩৮.৮৯%।

প্রধান  কৃষি ফসল  ধান, গম, আখ, শাকসবজি।

বিলুপ্ত অথবা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি  পাট, সূর্যমুখী, বাদাম, কাউন, তিসি, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, নারিকেল, কলা, কাঁঠাল।

যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৪৩২ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ১৬ কিমি, কাঁচারাস্তা ৪৮৯ কিমি; রেলপথ ২২.২৩ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, বাঁশের কাজ, বেতের কাজ।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   ময়দা, শাকসবজি।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৯১.৩% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮৫.৮%, ট্যাপ ৯.০% এবং অন্যান্য ৫.২%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৭১.৩% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ২৫.৭% পরিবার অস্বাস্থাকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ৩.০% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, হাসপাতাল ২।

এনজিও ব্র্যাক, আশা, এইড, পল্লী প্রগতি প্রকল্প।  [ইয়াসিন আশরাফ]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১,বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।