কবিরহাট উপজেলা

কবিরহাট উপজেলা (নোয়াখালী জেলা)  আয়তন: ১৮৫.২৫ বর্গ কিলোমিটার। অবস্থান: ২২°৪৪´ থেকে ২২°৫৩´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°০৮´ থেকে ৯১°১৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে বেগমগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলা, দক্ষিণে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে নোয়াখালী সদর উপজেলা ।

জনসংখ্যা ১৯৬৯৪৪; পুরুষ ৯২৬০১, মহিলা ১০৪৩৪৩। মুসলিম ১৮৭২৭১, হিন্দু ৯৬৬৬, খ্রিস্টান ২ এবং বৌদ্ধ ৫।

জলাশয় নোয়াখালী খাল।

প্রশাসন ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট নোয়াখালী সদর উপজেলার অংশ বিশেষ নিয়ে কবিরহাট উপজেলা সৃষ্টি করা হয়েছে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
৬৮ ৬৮ ১৭৪৪৮ ১৭৯৪৯৬ ১০৬৩ ৬১.৭ ৪৭.৭
পৌরসভা
আয়তন (বর্গ কিমি) ওয়ার্ড মহল্লা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতিতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
৯.৭৪ ১১ ১৭৪৪৮ ১৭৯১ ৬১.৭
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
ঘোষবাগ ৫৫ ৬৩৮৪ ৯৯৯৩ ১১৯৬৪ ৩৮.৫
চাপরাশির হাট ২৭ ৩৪০৮ ১০৮৮০ ১২৮৬২ ৫৪.২
ধানশালিক ৩৫ ১১২১৩ ৬৯৭৭ ৭৯৮৮ ৩৭.২
ধানসিঁড়ি ৪৫ ৯৯৪৯ ১৭৯৫১ ১৮১৮৯ ২৫.৮
নরোত্তমপুর ৭০ ৪০৪০ ১১৯৫০ ১৩৭৮৩ ৫৯.১
বাটাইয়া ২৩ ৩৫৪২ ১২০০৩ ১৪২১৮ ৬৫.৭
সোন্দলপুর ৯৫ ৪৮৩৪ ১৪৬২৩ ১৬১১৫ ৫৩.২

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ মুগল আমলের কবির পাটোয়ারী জামে মসজিদ (ঘোষবাগ গ্রাম), তিন গম্বুজ বিশিষ্ট হৈয়া মিয়া মসজিদ ও ছনখোলা দরবেশের (র.) মাযার (নরোত্তমপুর ইউনিয়ন)।

মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলার কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজাকাররা তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। ২৭ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনী ও রাজাকাররা কোম্পানিরহাট এলাকায় এবং ঘোষবাগ ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের বহু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নির্যাতন করে। ১৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকার জলিলের বাড়িতে হামলা করলে জলিলসহ তার কয়েকজন সহযোগী নিহত হয়। উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব যুদ্ধ হয় সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাঞ্ছারামপুর যুদ্ধ, তাল মোহাম্মদ হাট যুদ্ধ, চাপরাশির হাট যুদ্ধ এবং কোয়ারিয়ার টেক যুদ্ধ উপজেলায় কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ডোবায় ১টি বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে।

বিস্তারিত দেখুন কবিরহাট উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৪৯.০%; পুরুষ ৪৮.৮%, মহিলা ৪৯.২%। কলেজ ২, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৫, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৭, মাদ্রাসা ৮। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: কবিরহাট সরকারি কলেজ (১৯৬৭), চাপরাশির হাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩), কবিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৮), চাপরাশির হাট মাদ্রাসা (১৯০১), কবিরহাট মাদ্রাসা (১৯০৫)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ১।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, ডাল, শাকসবজি।

প্রধান ফল-ফলাদিব আম, জাম, তাল, খেজুর,  নারিকেল, সুপারি।

যোগাযোগ বিশেষত্ব  পাকারাস্তা ১৫২.২৪ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ০.৯৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ৬৮০.৪৩ কিমি।

হাটবাজার ও মেলা'  হাটবাজার ২০। চাপরাশির হাট, কবির হাট, কালীর হাট, ভূঞার হাট, মিয়ার হাট এবং করম বাজার উল্লেখযোগ্য।

বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৩৫.৭% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮০.৮%, ট্যাপ ০.৩% এবং অন্যান্য উৎস ১৮.৯%। এ উপজেলার অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়েছে।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলার ৫৬.৪% পরিবার স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন এবং ৩৩.৭% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। তবে ৯.৯% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল ১, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৯।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর এবং ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ঘুর্ণিঝড় ও বন্যায় উপজেলার ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

এনজিও এনআরডিএস। [এ.এম সাইফুল ইসলাম]

তথ্যসূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; কবিরহাট উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন  ২০০৭।