উখিয়া উপজেলা

উখিয়া উপজেলা (কক্সবাজার জেলা)  আয়তন: ২৬১.৮০ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২১°০৮´ থেকে ২১°২১´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৩´ থেকে ৯২°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে রামু উপজেলা, দক্ষিণে টেকনাফ উপজেলা, পূর্বে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও মায়ানমারের আরাকান রাজ্য, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর।

জনসংখ্যা ২০৭৩৭৯; পুরুষ ১০৪৫৬৭, মহিলা ১০২৮১২। মুসলিম ১৩৬৭৩৯, হিন্দু ৩৬০৫, খ্রিস্টান ১১৭৬১, বৌদ্ধ ৫৭ অন্যান্য ২৫। এ উপজেলায় চাকমা আদিবাসি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জলাশয় নাফ নদী ও রেজু খাল উল্লেখযোগ্য।

প্রশাসন উখিয়া থানায় গঠিত হয় ১৯২৬ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।

উপজেলা
পৌরসভা ইউনিয়ন মৌজা গ্রাম জনসংখ্যা ঘনত্ব(প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
শহর গ্রাম শহর গ্রাম
- ১৩ ৫৪ ২৭৩১৭ ১৮০০৬২ ৭৯২ ৪০.৫ ৩৫.৬
উপজেলা শহর
আয়তন (বর্গ কিমি) মৌজা লোকসংখ্যা ঘনত্ব (প্রতি বর্গ কিমি) শিক্ষার হার (%)
১৮.৩২ ২৭৩১৭ ১৪৯১ ৪০.৫
ইউনিয়ন
ইউনিয়নের নাম ও জিও কোড আয়তন (একর) লোকসংখ্যা শিক্ষার হার (%)
পুরুষ মহিলা
জালিয়া পালং ৩১ ৬৪৭৪ ২৪৫৪০ ২৩১১৬ ৩৩.৬
পালংখালী ৭৯ ৩৩৪৪২ ১৬৫০৮ ১৬৩৩৫ ৩৪.৩
রত্না পালং ৬৩ ৫১০৮ ১১১৬৭ ১১৩৫৭ ৪৮.২
রাজা পালং ৪৭ ৯৭৩৫ ২৮৬৬৩ ২৮২৩২ ৩৬.৯
হালদিয়া পালং ১৫ ১৬৬৯৯ ২৩৬৮৯ ২৩৭৭২ ৩৩.৬

সূত্র আদমশুমারি রিপোর্ট ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ জাদিমুরা বৌদ্ধ বিহার (৪নং রাজা পালং ইউনিয়ন); পাইন্যাসিয়া জামে মসজিদ, উখিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, উখিয়া সদরের কালী মন্দির।

মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে উখিয়ার ঘুমধুম জুনিয়র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইলিয়াছ মাস্টার নিহত হন, তাদের হাতে ধৃত হয়ে নিখোঁজ হন রত্নাপালং হাইস্কুলের ছাত্র নির্মল দে, শহীদ হন মনিদ্র লাল বড়ুয়া, মণীন্ড বড়ুয়া, ব্রজেন্দ্র লাল শীল ও আরও কয়েকজন।

বিস্তারিত দেখুন উখিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা ২০২০, খণ্ড ১।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ২৫৬, মন্দির ৪৪, প্যাগোডা ৯২।

শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়হার ৩৬.৩%; পুরুষ ৩৮.০%, মহিলা ৩৪.৫%। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: উখিয়া ডিগ্রি কলেজ (১৯৯১), রত্না পালং বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৬), উখিয়া বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৭), উখিয়া মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯২২), রাজা পালং এমদাদুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৩০)।

সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ক্লাব ১২, সিনেমা হল ১, খেলার মাঠ ১২।

দর্শনীয় স্থান দীর্ঘ ইনানী সী বিচ (১৮ কিমি), টেক পাথরের স্তূপ (পাটুয়া)।

জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৫৪.৪০%, অকৃষি শ্রমিক ১০.৬১%, ব্যবসা ১৫.০৫%, চাকরি ০.৩৪%, নির্মাণ ১.৪৫%, ধর্মীয় সেবা ০.৩৪%, রেন্ট আন্ড রেমিটেন্স ১.৪৬%, পরিবহন ও যোগাযোগ ৩.৪০% এবং অন্যান্য ১২.৯৫%।

প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, ডাল, আখ, মসলা, পাট, তুলা, পান, শাকসবজি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, সরিষা।

প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, আনারস, পেঁপে, কলা, সুপারি, নারিকেল।

মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৮, হ্যাচারি ১০।

যোগযোগ বিশেষত্ব  পাকারাস্তা ৯৪ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ১০৮ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৮৪ কিমি; নৌপথ ১৫ কিমি।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, ঘোড়া ও গরুর গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানা ধানকল ১৩৫, ফ্লাওয়ারমিল ৮৫, বরফকল ২।

কুটিরশিল্প তাঁতশিল্প ৮০, কাঁসা ও পিতল শিল্প ৯, বাঁশ ও বেতের কাজ ৪৩১, সূচিশিল্প ৫৪, মৃৎশিল্প ১১, লৌহশিল্প ২৫।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫, মেলা ১; উখিয়া, রুমখাঁ, কোট, মরিচ্ছা ও কালখালী বাজার এবং বৈশাখী মেলা উল্লেখযোগ্য।

প্রধান রপ্তানিদ্রব্য   পান, সুপারি, নারিকেল, চিংড়ির পোনা।

বিদ্যুৎ ব্যবহার উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ২৩.২% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

পানীয়জলের উৎস নলকূপ ৮২.৭%, ট্যাপ ০.৮% এবং অন্যান্য উৎস ১৬.৫%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা উপজেলার ৩৪.১% পরিবার স্বাস্থ্যকর এবং ৪৩.৬% পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ২২.৩% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৫, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪।

এনজিও ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, কেয়ার, কারিতাস।  [তৌহিদ হোসেন চৌধুরী]

তথ্যসূত্র   আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১ ও ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো; উখিয়া উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদন ২০০৭।