অঙ্গ

অঙ্গ  বুদ্ধদেবের আবির্ভাবের পূর্বে অঙ্গুত্তর নিকায়ে প্রাপ্ত তালিকায় প্রাচীন ভারতের ষোলটি মহাজনপদের মধ্যে একটি হচ্ছে অঙ্গ। অথর্ব বেদেই এ জনপদের প্রাচীনতম উল্লেখ; যেখানে মগধ, গান্ধারী এবং মুজরৎদের সাথে অঙ্গদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নিগৃহীত জনগোষ্ঠী হিসেবে। অবশ্য জৈন প্রজ্ঞাপণতে অঙ্গ ও বঙ্গ-এর উল্লেখ রয়েছে আদি আর্য জনগোষ্ঠী হিসেবেই। মহাভারতের (৮০০-৭০০ খ্রি.পূর্ব) সাক্ষ্যে অঙ্গের অবস্থিতি বিহারের ভাগলপুর- মুঙ্গের এবং সংলগ্ন বাংলার এলাকায় নির্দেশ করা সম্ভব। এর উত্তরের সর্ব-পশ্চিম সীমানায় রয়েছে গঙ্গা ও সরজু নদীর মিলনস্থল। চম্পা নদী পূর্বে অঙ্গ ও পশ্চিমে মগধের মধ্যে সীমানা নির্দেশ করে। চম্পা নদী ও গঙ্গার মিলনস্থলের গঙ্গার ডান তীরে অবস্থিত চম্পানগরীই ছিল প্রাচীন অঙ্গ-এর রাজধানী। দীর্ঘ নিকায়ে ভারতের ছয়টি প্রধান নগরের মধ্যে চম্পাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সে সময়কার সমৃদ্ধশালী বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে।

খ্রিস্টপূর্ব ছয় শতকে অঙ্গকে মগধ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন বিম্বিসার এবং তাঁর পুত্র অজাতশত্রু এর প্রশাসক নিযুক্ত হয়েছিলেন। অঙ্গ-এর মধ্যে প্রাচীনকালের প্রসিদ্ধ ও উল্লেখযোগ্য স্থান ছিল মোদাগিরি (মুঙ্গের), পাথরঘাটায় অবস্থিত বৌদ্ধ গুহা এবং পাল সম্রাট ধর্মপাল নির্মিত বিক্রমশীলা মহাবিহার।  [আবদুল মমিন চৌধুরী]